
গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক গৃহবধুর রহস্যজনক মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূর তানজিলা বেগম (২৫) কালীগঞ্জ উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের পোটান গ্রামের মোত্তাকিনের স্ত্রী। বৃহস্পতিবার (০৮মে) রাতে মোত্তাকিনের বাড়ি থেকে পুলিশ ঐ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার( ৯ মে) সকালে মরদেহাটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে নিহতের পরিবারের দাবি এটা আত্মহত্যা নয় তানজিলা কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে গলায় রশি দিয়ে সিলিং ফ্যানের আংটার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার করছে তার স্বামীর পরিবারের লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে তানজিলার স্বামী মোত্তাকিন পলাতক রয়েছেন।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধু তানজিলার সাথে তার স্বামী মোত্তাকিনের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঐ দিনই বিকালে তানজিলার লাশ তার বসত ঘরের সিলিং ফ্যানের আংটার সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেতে পান স্থানীয়রা। ঘটনাটি জানাজানি হলে মোত্তাকিনের পরিবারের সদস্যরা দ্রুত গলার রশি কেটে লাশটি নামিয়ে ফেলে এবং আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করতে থাকেন।
পরে এলাকাবাসী থানায় খবর দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। তবে পরকিয়া সন্দেহে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো বলে জানান স্থানীয়রা। এ ঘটনাটি অর্থের বিনিময় ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল নিহতের পরিবারকে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করছে বলে দাবী তানজিলার পরিবার । নিহত তানজিলার বাবা আমজাদ হোসেন বলেন, আমার মেয়ে তানজিলাকে গত চার বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী পোটান গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র মোত্তাকিনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেই।
তাদের সংসারে দুটি মেয়ে সন্তান হওয়ার পর থেকে স্বামী মোত্তাকিনের সাথে তানজিলার প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো এবং মোত্তাকিন আমার মেয়েকে প্রায় সময়ই শারীরিকভাবে নির্যাতন করত। যা একাধিকবার পারিবারিকভাবে মীমাংসা করি।সেই সময় আমার মেয়েকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলে মেয়েটা কোন অবস্থা তার স্বামী ও সন্তানদের ছেড়ে আসতে রাজি হয়নি।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে মোত্তাকিন আমাকে ফোন দিয়ে জানায় তানজিলা অসুস্থ দ্রুত এসে নিয়ে যান। আমি তাদের বাড়ীতে গিয়ে আমার মেয়েকে উঠোনের মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে মোত্তাকিনের পরিবারের লোকজন বলে তানজিলা আত্মহত্যা করেছে। তার কিছুক্ষন পর কালীগঞ্জ থানার এসআই কামরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে আসলে মোত্তাকিনের পরিবার স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের দিয়ে অর্থের বিনিময় তাকে ম্যানেজ করে হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অপকৌশল করে।
এ সময় তারা আমাকেও থানায় অভিযোগ না করার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করে। আমার ধারণা তারা আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, সংবাদ পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মোক্তারপুর ইউনিয়নের পোটান এলাকা থেকে তানজিলা নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করি। শুক্রবার সকালে মৃত্য দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। নিহত তানজিলার বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে মোত্তাকিন কে বিবাদী করে অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার তদন্ত চলছে, ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।