, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বগুড়া ৪ কাহালু -নন্দীগ্রাম আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ বগুড়া শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১০ প্রতিষ্ঠানের লক্ষাধিক টাকা জরিমানা বগুড়া দুপচাঁচিয়ায় দুর্বৃত্তদের হাতে শ্বশুর ও পুত্রবধূ খুন হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তিন ঘন্টার বাজারে বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি বগুড়া নন্দীগ্রামে ৭০গ্রাম হেরোইনসহ আটক তিন বগুড়া ধুনটে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১ বগুড়া ধুনটে ইছামতি নদী থেকে নবজাতক শিশুর লাশ উদ্ধার তৃর্ণমুল পর্য়ায়ে মহিলা দলের কার্য়ক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে হবে—-রেজাউল করিম বাদশা লালমনিরহাটে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি

বগুড়া শেরপুরে চাহিদার তুলনায় বেশি কোরবানীযোগ্য পশু প্রস্তুত করেছেন খামারীরা

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বগুড়ার শেরপুরে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার খামারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্রেতাদের কাছে কোরবানির পশু আকর্ষণীয় করে তুলতে যা যা করনীয় তাই করছেন খামারিরা। তবে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা যেমন শঙ্কায় আছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও। কারণ হিসেবে এ বছর গো-খাদ্যের দাম অত্যাধিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানি পশু প্রস্তুতকরণে ব্যয় বেশি হয়েছে জানান তারা। খামামিরা প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন বলে জানায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৬ হাজারের অধিক মানুষ এ পেশায় জড়িত রয়েছেন। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য ঈদকে ঘিরে বাড়িতে একটি দুইটি করে গরু লালন পালন করেছেন। এ সময় বিক্রয় করবেন তারা।

কোরবানী ঈদে এ উপজেলায় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার প্রায় ৭৫ হাজার ১৪২টি কোরবানীর পশু প্রস্তুত করেছেন, সেক্ষেত্রে ৬ হাজার ৫৮৭ পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এর মধ্যে ষাড় ২৩ হাজার ২৩৭, বলদ ৭ হাজার ৪৭৩, গাভী ৪ হাজার ৩৩৯,  ছাগল ৩৬ হাজার ৪১২, ভেড়া ৩ হাজার ৫২১ ও মহিষ ১৬০টি। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭০ হাজার ৫০০টি।

প্রাণিসম্পদ সূত্রে আরও জানা যায়, কোরবানি পশু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য শেরপুর পৌর শহরের বারোদুয়ারী, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর ও ছোনকা, বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল, কুসুম্বী ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া, খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দিসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ১ পৌরসভায় ১১টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট বাজার রয়েছে। এ সকল হাটে নিয়মিত পশু ক্রয়-বিক্রয় চলছে।

সরেজমিনে গত ২৬ মে বিকালে শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ভাটরা গ্রামে ‘সবুজ ডেইরি ফার্ম’ গিয়ে দেখা যায়, এ ফার্মে বেশ কয়েকটি মোটাতাজা গরু বাধা রয়েছে দুটো সেডে। গরুগুলো বেশ হৃষ্টপুষ্ট। ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন তিনি শখের বসে এ ফার্ম করেছে বেশ কয়েক বছর আগে। তিনি বর্তমানে ওই ইউনিয়নের একজন সদস্য। তার খামারে রয়েছে মোটাতাজাকরণ ১৬টি দেশি-বিদেশি জাতের গরু ও ৬টি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী ও বেশ কয়েকটি বাছুর। ২ শ্রমিক সেলিম হোসেন ও লিপটন রয়েছেন যারা গরু পরিচর্যায় নিয়োজিত। কোরবানি উপলক্ষে প্রতি বছর দেশি এবং বিদেশি জাতের গরু পালন করেন আমজাদ হোসেন।

খামারী আমজাদ হোসেন জানান, তার একেকটি কোরবানী যোগ্য গরু ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা দামের। তিনি গত পরশু সাড়ে ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। ক্রেতা ঢাকায় থাকেন। তার খামারের গরুগুলোকে সুষম খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজা করেছেন। কোন রকম ইনজেকশন বা ফিড খাওয়াননি। সুষম খাবারগুলোর মধ্যে ভূষি, ভুট্টা, গম, বুট, কালোজিরার মিক্সার পাউডার এবং ধানের কুড়া, ঘাস, খড় খাবার হিসেবে দেন।

তাছাড়া গরুকে যদি সুষম খাবার দেওয়া হয় এবং গরু যদি সুস্থ থাকে তাহলে কোন ইনজেকশন বা ফিড খাওয়ার দরকার পড়ে না মোটাতাজা করণের জন্য। গরুর সঠিক পরিচর্যা এবং সুষম খাবার দিলে গরু আপনা আপনি বেড়ে ওঠে। আমি গরুগুলো খামার থেকেই বিক্রি করতে চাই। তবে খামারে যদি বিক্রি না হয় তবে হাটে উঠাবো।

একই উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ‘মেসার্স শামীম ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ফার্ম’ এ গিয়ে দেখা যায়, স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলমের খামারে রয়েছে ৫০টি দেশি-বিদেশি জাতের গরু। পাঁচজন শ্রমিক রয়েছেন যারা গরু পরিচর্যায় নিয়োজিত। কোরবানি উপলক্ষে প্রতি বছর দেশি এবং বিদেশি জাতের গরু পালন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রস এবং শাহীওয়াল ক্রস জাতের গরু রয়েছে।

শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নিয়ায কাযমীর রহমান জানান, কোরবানী ঈদে এইসব পশু থেকে প্রায় ৫’শ ৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হবে। এছাড়াও কোরবানি পশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার ছোট বড় সকল হাটে প্রাণিসম্পদ অফিসের ১১টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করছেন।

জনপ্রিয়

বগুড়া ৪ কাহালু -নন্দীগ্রাম আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ড. মোস্তফা ফয়সাল পারভেজ

বগুড়া শেরপুরে চাহিদার তুলনায় বেশি কোরবানীযোগ্য পশু প্রস্তুত করেছেন খামারীরা

প্রকাশের সময় : ০২:৩৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫

আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে বগুড়ার শেরপুরে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার খামারিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ক্রেতাদের কাছে কোরবানির পশু আকর্ষণীয় করে তুলতে যা যা করনীয় তাই করছেন খামারিরা। তবে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা যেমন শঙ্কায় আছেন, তেমনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্রেতারাও। কারণ হিসেবে এ বছর গো-খাদ্যের দাম অত্যাধিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানি পশু প্রস্তুতকরণে ব্যয় বেশি হয়েছে জানান তারা। খামামিরা প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন বলে জানায় প্রাণিসম্পদ দপ্তর।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে উপজেলার প্রায় ৬ হাজারের অধিক মানুষ এ পেশায় জড়িত রয়েছেন। খামারি ছাড়াও উপজেলার সাধারণ কৃষকরা বাড়তি ইনকামের জন্য ঈদকে ঘিরে বাড়িতে একটি দুইটি করে গরু লালন পালন করেছেন। এ সময় বিক্রয় করবেন তারা।

কোরবানী ঈদে এ উপজেলায় খামারি ও প্রান্তিক কৃষক মিলে এবার প্রায় ৭৫ হাজার ১৪২টি কোরবানীর পশু প্রস্তুত করেছেন, সেক্ষেত্রে ৬ হাজার ৫৮৭ পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এর মধ্যে ষাড় ২৩ হাজার ২৩৭, বলদ ৭ হাজার ৪৭৩, গাভী ৪ হাজার ৩৩৯,  ছাগল ৩৬ হাজার ৪১২, ভেড়া ৩ হাজার ৫২১ ও মহিষ ১৬০টি। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৭০ হাজার ৫০০টি।

প্রাণিসম্পদ সূত্রে আরও জানা যায়, কোরবানি পশু ক্রয় বিক্রয়ের জন্য শেরপুর পৌর শহরের বারোদুয়ারী, উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর ও ছোনকা, বিশালপুর ইউনিয়নের জামাইল, কুসুম্বী ইউনিয়নের বেলঘড়িয়া, খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দিসহ উপজেলার ১০ ইউনিয়নের ১ পৌরসভায় ১১টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট বাজার রয়েছে। এ সকল হাটে নিয়মিত পশু ক্রয়-বিক্রয় চলছে।

সরেজমিনে গত ২৬ মে বিকালে শেরপুর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের ভাটরা গ্রামে ‘সবুজ ডেইরি ফার্ম’ গিয়ে দেখা যায়, এ ফার্মে বেশ কয়েকটি মোটাতাজা গরু বাধা রয়েছে দুটো সেডে। গরুগুলো বেশ হৃষ্টপুষ্ট। ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারী আমজাদ হোসেন তিনি শখের বসে এ ফার্ম করেছে বেশ কয়েক বছর আগে। তিনি বর্তমানে ওই ইউনিয়নের একজন সদস্য। তার খামারে রয়েছে মোটাতাজাকরণ ১৬টি দেশি-বিদেশি জাতের গরু ও ৬টি ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী ও বেশ কয়েকটি বাছুর। ২ শ্রমিক সেলিম হোসেন ও লিপটন রয়েছেন যারা গরু পরিচর্যায় নিয়োজিত। কোরবানি উপলক্ষে প্রতি বছর দেশি এবং বিদেশি জাতের গরু পালন করেন আমজাদ হোসেন।

খামারী আমজাদ হোসেন জানান, তার একেকটি কোরবানী যোগ্য গরু ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা দামের। তিনি গত পরশু সাড়ে ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। ক্রেতা ঢাকায় থাকেন। তার খামারের গরুগুলোকে সুষম খাবারের মাধ্যমে মোটাতাজা করেছেন। কোন রকম ইনজেকশন বা ফিড খাওয়াননি। সুষম খাবারগুলোর মধ্যে ভূষি, ভুট্টা, গম, বুট, কালোজিরার মিক্সার পাউডার এবং ধানের কুড়া, ঘাস, খড় খাবার হিসেবে দেন।

তাছাড়া গরুকে যদি সুষম খাবার দেওয়া হয় এবং গরু যদি সুস্থ থাকে তাহলে কোন ইনজেকশন বা ফিড খাওয়ার দরকার পড়ে না মোটাতাজা করণের জন্য। গরুর সঠিক পরিচর্যা এবং সুষম খাবার দিলে গরু আপনা আপনি বেড়ে ওঠে। আমি গরুগুলো খামার থেকেই বিক্রি করতে চাই। তবে খামারে যদি বিক্রি না হয় তবে হাটে উঠাবো।

একই উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের ‘মেসার্স শামীম ডেইরি অ্যান্ড ক্যাটল ফার্ম’ এ গিয়ে দেখা যায়, স্বত্ত্বাধিকারী জাহাঙ্গীর আলমের খামারে রয়েছে ৫০টি দেশি-বিদেশি জাতের গরু। পাঁচজন শ্রমিক রয়েছেন যারা গরু পরিচর্যায় নিয়োজিত। কোরবানি উপলক্ষে প্রতি বছর দেশি এবং বিদেশি জাতের গরু পালন করেন জাহাঙ্গীর আলম। সেখানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রস এবং শাহীওয়াল ক্রস জাতের গরু রয়েছে।

শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নিয়ায কাযমীর রহমান জানান, কোরবানী ঈদে এইসব পশু থেকে প্রায় ৫’শ ৪৫ কোটি টাকা লেনদেন হবে। এছাড়াও কোরবানি পশুর সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য উপজেলার ছোট বড় সকল হাটে প্রাণিসম্পদ অফিসের ১১টি মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করছেন।