, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তিন ঘন্টার বাজারে বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি বগুড়া নন্দীগ্রামে ৭০গ্রাম হেরোইনসহ আটক তিন বগুড়া ধুনটে গৃহবধূকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১ বগুড়া ধুনটে ইছামতি নদী থেকে নবজাতক শিশুর লাশ উদ্ধার তৃর্ণমুল পর্য়ায়ে মহিলা দলের কার্য়ক্রমকে আরও শক্তিশালী করতে হবে—-রেজাউল করিম বাদশা লালমনিরহাটে ৬ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি লালমনিরহাটে ‎একই দিনে, সরকারি দুই প্রতিষ্ঠানে মিলল দুইজনের ঝুলন্ত লাশ ‎লালমনিরহাটের খাতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা মাদকসেবী ও চোর চক্রের ভয়াল ছোবলে অতিষ্ঠ বগুড়া ধুনটে আগুনে পুড়ে ছাই কৃষকের বসতবাড়ি

ঝিনাইগাতীতে ৪০ বছরেও গৃহহীন মমেনার ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ৪০ বছরেও গৃহহীন বিধবা মমেনার ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই। মমেনা বেগম উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া গ্রামের মরহুম ফজল মিয়ার স্ত্রী। ফজল মিয়া ছিলেন একজন দিনমজুর ও গৃহহীন। পুরো জীবন কাটিয়েছেন অন্যের বাড়িতে।

 

৩ ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার ছিলো তার। দিনমজুরি করে চলতো তার সংসার। গত ৭ বছর পুর্বে ফজল মিয়ার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, ফজল মিয়ার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মমেনা বেগম দিনমজুরি শুরু করে। দিনমজুরি করে যা পায় তাই দিয়েই চলে তার সংসার। একদিন কাজে না গেলে সেদিন মমেনার ঘরে চুলা জ্বলে না। ছেলেরা বিয়ে সাদী করে আলাদা সংসার করে আসছে।

 

কিন্তু শেষ হয়নি মমেনা বেগমের জীবন যুদ্ধ। অন্যের বাড়িতে থেকে দিনমজুরি করে চলে তার সংসার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রতিদিন কাজেও যেতে পারেন না তিনি। এর পরেও জীবিকা নির্বাহের তাগিদে থেমে নেই মমেনার বেগমের জীবন যুদ্ধ। স্থানীয়রা জানান, মমেনা বেগম নদী থেকে প্রায় প্রতিদিন মাছ ধরে প্রতিবেশিদের কাছে ৫০/ ৬০ টাকায় বিক্রি করে। আর এই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলে তার সংসার। মমেনা বেগম জানান অন্যের বাড়িতে থাকতে গেলে তাদের অনুগত হয়েই থাকতে হয়। আর তাল থেকে তিল খসলেই বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

 

এভাবে গত ৪০ বছরে কত জনের বাড়িতে থেকেছেন তা মমেনা বেগম হিসাব করে সারতে পারবেন না বলে জানান মমেনা বেগম। সর্বশেষ গত ৪ বছর ধরে একজনের বাড়িতে আছেন মমেনা বেগম। কিন্তু গত সাম খানেক আগে গাছের আম পাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়ির মালিক তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে মমেনা বেগমের স্থান হয়েছে গোমড়া গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা বিধবা নারী আঙ্গুরি বেগমের (৬৮) ঘরে। যদিও আঙ্গুরি বেগমের ঘরে মাথা গুজার ঠাই হলেও আশঙ্কা কাটেনি মমেনা বেগমের মনে। কবে জানি এ ঘর থেকে ও তাকে বের হয়ে যেতে হয়।

 

এ আশঙ্কা নিয়েই মমেনা বেগমের দিনকাটছে আঙ্গুরি বেগমের ঘরে। মমেনা বেগমের অভিযোগ গত ৪০ বছরে একটি সরকারি ঘর অথবা গুচ্ছ গ্রামের একটি ঘর পাওয়ার আশায় বহুবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু তাদের দাবি পুরন করতে না পারায় ৪০ বছরেও মমেনা বেগমের ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর অথবা মাথা গুজার ঠাই।

 

অথচ ২০১২ সালে ওই গ্রামে নির্মিত গুচ্ছগ্রামে ৩০ পরিবারকে পুনর্বাসন দেখানু হলেও গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণের পর থেকেই ৫ পরিবার ঘরে থাকেন ন। স্থানীয় রা জানান ঘরগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় অষ্ট হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ঘর বরাদ্ধ নিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। থাকতে দিয়েছেন অন্য কোন লোককে। অথচ ৪০ বছরেও গৃহহীন বিধবা মমেনা বেগমের ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে কথা হলে তদন্ত সাপেক্ষে মমেনা বেগমের বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।

জনপ্রিয়

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে তিন ঘন্টার বাজারে বিক্রি হয় কোটি টাকার মাছ

ঝিনাইগাতীতে ৪০ বছরেও গৃহহীন মমেনার ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই

প্রকাশের সময় : ০১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে ৪০ বছরেও গৃহহীন বিধবা মমেনার ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই। মমেনা বেগম উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের গোমড়া গ্রামের মরহুম ফজল মিয়ার স্ত্রী। ফজল মিয়া ছিলেন একজন দিনমজুর ও গৃহহীন। পুরো জীবন কাটিয়েছেন অন্যের বাড়িতে।

 

৩ ছেলেসহ ৫ সদস্যের পরিবার ছিলো তার। দিনমজুরি করে চলতো তার সংসার। গত ৭ বছর পুর্বে ফজল মিয়ার মৃত্যু হয়। জানা গেছে, ফজল মিয়ার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী মমেনা বেগম দিনমজুরি শুরু করে। দিনমজুরি করে যা পায় তাই দিয়েই চলে তার সংসার। একদিন কাজে না গেলে সেদিন মমেনার ঘরে চুলা জ্বলে না। ছেলেরা বিয়ে সাদী করে আলাদা সংসার করে আসছে।

 

কিন্তু শেষ হয়নি মমেনা বেগমের জীবন যুদ্ধ। অন্যের বাড়িতে থেকে দিনমজুরি করে চলে তার সংসার। শারীরিক অসুস্থতার কারণে প্রতিদিন কাজেও যেতে পারেন না তিনি। এর পরেও জীবিকা নির্বাহের তাগিদে থেমে নেই মমেনার বেগমের জীবন যুদ্ধ। স্থানীয়রা জানান, মমেনা বেগম নদী থেকে প্রায় প্রতিদিন মাছ ধরে প্রতিবেশিদের কাছে ৫০/ ৬০ টাকায় বিক্রি করে। আর এই দিয়ে খেয়ে না খেয়ে চলে তার সংসার। মমেনা বেগম জানান অন্যের বাড়িতে থাকতে গেলে তাদের অনুগত হয়েই থাকতে হয়। আর তাল থেকে তিল খসলেই বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।

 

এভাবে গত ৪০ বছরে কত জনের বাড়িতে থেকেছেন তা মমেনা বেগম হিসাব করে সারতে পারবেন না বলে জানান মমেনা বেগম। সর্বশেষ গত ৪ বছর ধরে একজনের বাড়িতে আছেন মমেনা বেগম। কিন্তু গত সাম খানেক আগে গাছের আম পাড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়ির মালিক তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বর্তমানে মমেনা বেগমের স্থান হয়েছে গোমড়া গুচ্ছ গ্রামের বাসিন্দা বিধবা নারী আঙ্গুরি বেগমের (৬৮) ঘরে। যদিও আঙ্গুরি বেগমের ঘরে মাথা গুজার ঠাই হলেও আশঙ্কা কাটেনি মমেনা বেগমের মনে। কবে জানি এ ঘর থেকে ও তাকে বের হয়ে যেতে হয়।

 

এ আশঙ্কা নিয়েই মমেনা বেগমের দিনকাটছে আঙ্গুরি বেগমের ঘরে। মমেনা বেগমের অভিযোগ গত ৪০ বছরে একটি সরকারি ঘর অথবা গুচ্ছ গ্রামের একটি ঘর পাওয়ার আশায় বহুবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েছেন। কিন্তু তাদের দাবি পুরন করতে না পারায় ৪০ বছরেও মমেনা বেগমের ভাগ্যে জুটেনি একটি সরকারি ঘর অথবা মাথা গুজার ঠাই।

 

অথচ ২০১২ সালে ওই গ্রামে নির্মিত গুচ্ছগ্রামে ৩০ পরিবারকে পুনর্বাসন দেখানু হলেও গুচ্ছ গ্রাম নির্মাণের পর থেকেই ৫ পরিবার ঘরে থাকেন ন। স্থানীয় রা জানান ঘরগুলো তালাবদ্ধ অবস্থায় অষ্ট হচ্ছে। আবার কেউ কেউ ঘর বরাদ্ধ নিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। থাকতে দিয়েছেন অন্য কোন লোককে। অথচ ৪০ বছরেও গৃহহীন বিধবা মমেনা বেগমের ভাগ্যে জুটেনি মাথা গুজার ঠাই।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেলের সাথে কথা হলে তদন্ত সাপেক্ষে মমেনা বেগমের বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।