
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় গত ৬ দিনে আটটি চুরির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভবানীপুর ইউনিয়নের আমিনপুর জানালার গ্রিল কেটে দুর্ধর্ষ চুরি বাড়ির লোকজন অজ্ঞান থাকায় ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। বাড়ির মালিক ইউসুফ মাস্টারসহ পরিবারের ১০ দিনের শিশুসহ ৪ জন অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।
অজ্ঞান ব্যক্তিরা হলেন, ইউসুফ আলী মাস্টার (৪০), স্ত্রী শাপলা খাতুন (৩৫), মেয়ে রোমান ও ১০ দিন বয়সের শিশু বাচ্চা।
রবিবার (২৭শে জুলাই) দিবাগত রাতে ভবানীপুর ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাতের খাওয়া-দাওয়ার পর বাড়ির সদস্যরা ঘুমিয়ে পড়ে। পরে সকালে এলাকার লোকজন জানতে পারে আহতদেরকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। মেয়ে রোমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ১০ দিনের শিশু বাচ্চাসহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত। বাসাবাড়ি, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ট্রাকসহ মূল্যবান মালামাল চুরির ঘটনাা ঘটেছে। এসব ঘটনায় জনমনে চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই শনিবার থেকে ২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছয়দিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোট সাতটি চুরির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ সুঘাট ইউনিয়নের চকনশি গ্রামের মানিকের বাড়িতে জানালার গ্রীল কেটে সোনার গহনা ও নগদ টাকা চুরি হয়। ২৩ জুলাই কুসুম্বি ইউনিয়নের দাড়কিপাড়া গ্রামে হযরত আলীর বাড়ির তালা ভেঙে প্রায় ১৪ লাখ টাকার মালামাল চুরি হয়। চুরি হওয়া মালামালের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও মূল্যবান ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে।
একইদিনে শাহবন্দেগী ইউনিয়নের ফজলুল মোড় এলাকার রোকনের বাড়িতে একই কায়দায় চুরি সংঘটিত হয়। এতে তার বাড়ি থেকে নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা ও ১ ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এর আগের দিন মঙ্গলবার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে নওদাপাড়া এলাকার হাসানের একটি ১৫০ সিসি পালসার মোটরসাইকেল চুরি হয়। একইদিনে বাগানবাড়ী এলাকার আল মামুনের বাড়ি থেকে দুটি মোবাইল এবং পরদিন বুধবার খন্দকার পাড়ার সুমাইয়ার মোবাইল ফোন চুরি হয় তার বাড়ি থেকে।
এছাড়া ১৯ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় ধুনট মোড় এলাকা থেকে একটি ট্রাকসহ মাছের খাদ্য চুরি হলেও পরে ট্রাক ও মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এসব চুরির ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেবল একজনকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাতে পুলিশের টহল কার্যত অপ্রতুল, যা অপরাধ বাড়ার একটি বড় কারণ। এ সকল চুরির ঘটনায় শেরপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এগুলো ছাড়াও আরো অনেক চুরির ঘটনা ঘটেছে যা অভিযোগ হয়নি বলে দাবি করে ধুনট মোড় এলাকার কামরুল হাসানসহ জুয়েল রানা, হুমায়ুন, রাশেদুল।
এলাকাবাসী আবুল হোসেন, ছামাদ, ডলার বলেন, শেরপুরে চোরের উৎপাত এতটাই বেড়েছে যে বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পর্যন্ত বেড়াতে যাওয়া যাচ্ছে না। চুরি প্রতিরোধে রাতের টহল জোরদার করা হয়েছে। চুরির সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।