
শেরপুরের নালিতাবাড়ীর নাকুগাঁও স্থলবন্দরে দিয়ে আমদানি রপ্তানিতে কাঙ্খিত সুফল পাচ্ছে না ব্যবসায়ীরা।
এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২১ পন্য আমদানি করার চুক্তি হয় ভারতের সাথে। কিন্তু দীর্ঘ ১০ বছরেও ভারত এ চুক্তি বাস্তবায়ন করেনি। ফলে সম্ভাবনা থাকা সত্বেও আলোর মুখ দেখছে না স্থল বন্দরটি। এতে যে উদ্দেশ্যে স্থলবন্দটি স্থাপিত হয় সে উদ্দেশ্য পর্যবসিত হচ্ছে। জানা গেছে ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশ বানিজ্যিক চুক্তি বৃদ্ধি ও আমদানি রপ্তানির উদ্দেশ্যে শেরপুরের সীমান্তে নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও প্রথমে একটি শুল্কবন্দর স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু হয়।
বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শুল্ক বন্দরের কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৫ সালে শুল্ক বন্দর থেকে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর স্থাপনের কাজ হাতে নেয় সরকার । সাড়ে ১৩ একর জমির ওপর ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নাকুগাঁও থেকে নকলা উপজেলা পর্যন্ত সাড়ে ২৯ কিলোমিটার সড়কও নির্মান কাজ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, এ স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২১টি পণ্য আমদানির অনুমতি লাভ করে স্থল বন্দরটি । স্থানীয় ব্যবসায়ী ও স্থলবন্দর সুত্রে জানা গেছে, এ স্থলবন্দর দিয়ে ২১ পন্য আমদানী করার কথা থাকলে ও শুধু মাত্র কয়লা আর পাথর ছাড়া অন্যকিছু আমদানি হচ্ছে না। তবুও স্বল্পপরিসরে পাথর আমদানি করা হচ্ছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে স্থল বন্দরের কার্যক্রম । বেকার হয়ে পড়েছেন ৫ হাজার শ্রমিক। অপরদিকে কোটি টাকার ঋণপত্র খুলে বিপাকে পড়ে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হলে জানা গেছে এ স্থলবন্দর হয়ে লাভ জনক যেসব পণ্য আমদানি করা সহজ হবে, সেসব পণ্য আমদানির অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এ বন্দরের ওপারেই ভারতের মেঘালয় রাজ্য। সেখান থেকে
নাকুগাঁও স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে- গবাদিপশু , মাছের পোনা , তাজা ফলমূল , গাছ-গাছরা , বীজ , গম , পাথর , কয়লা , রাসায়নিক সার , চায়না ক্লে , কাঠ , টিম্বার , চুনাপাথর , পেঁয়াজ , মরিচ , রসুন , আদা , বলক্লে ও কোয়ার্টজ। এসব পণ্য আমদানির কথা থাকলেও ভারত ও ভুটান থেকে শুধু মাত্র পথর আমদানি হচ্ছে।
স্থলবন্দরের শ্রমিক আজিজুল হক বলেন, ‘এই বন্দর দিয়ে আগে পাথর ও কয়লা আসতো। কিন্তু এখন স্বল্পপরিসরে শুধু পাথর আনা হয়। এতে স্থলবন্দরের প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করে আসছে। নাকুগাঁও বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এ বন্দরে শ্রমিক ইউনিয়ন শাখার অন্তর্ভুক্তসহ আশপাশের এলাকার নারী-পুরুষসহ প্রায় ৫ হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে স্বরবন্দর অনুমোদিত ২১ টি পন্য আমদানি করা হলে একদিকে প্রতিবছর সরকারের ঘরে আসবে বিপুল পরিমাণের রাজস্ব। পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে শতশত শ্রমিকের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।
নাকুগাঁও স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মো,জাহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বর্তমানে স্বল্পপরিসরে শুধুমাত্র পাথর আমদানি করা হচ্ছে। কিছু পাথর ভুটান থেকে আমদানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন ভারত অন্যান্য ২০ টি পন্যের আমদানি ছাড় দিচ্ছে না। ভারত পন্যগুলো ছাড় দিলে নাকুগাঁও স্থলবন্দরের শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি,সরকারি রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিসহ নাকুগাঁও স্থলবন্দর এলাকার প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসবে।