
বাদশা প্রমানিক নীলফামারী ডিমলা প্রতিনিধিঃ
বুড়ি তিস্তা ও শাখা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে শতাধিক পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।হাজার হাজার একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন। শত শত বাড়িঘর এবং হাজার হাজার একর জমি হুমকির মুখে। জরুরী ভিত্তিতে বাত নির্মাণের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন।
নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার নাউতারা ইউনিয়নের সাতজন মৌজায় বুড়ি তিস্তা ও শাখা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে শতাধিক পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। নদীভাঙনের কবলে পড়ে বসতভিটা, ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসী দ্রুত নদী খনন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙন চললেও প্রশাসন কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে নতুন নতুন এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। সাতজান মৌজা সহ বিভিন্ন গ্রাম ইতোমধ্যেই মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কৃষকদের দাবি, শুধু নাউতারা ইউনিয়নের অন্তর্গত এলাকা থেকেই এখন পর্যন্ত প্রায় ১,০০০ (এক হাজার) পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অধিকাংশই কৃষক, যারা কৃষিকাজ ও ফসলের উপর নির্ভরশীল। নদীভাঙনের ফলে তারা জমি হারিয়ে চরম মানবেতর অবস্থায় দিন পার করছেন।
ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন এবং বিভাগীয় পর্যায়ে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হয়েছে। এতে নদী খনন, সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ, এবং পানি নিষ্কাশন স্ট্রাকচার তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর মতে, এসব স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভাঙনের মাত্রা আরও ভয়াবহ হবে এবং জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়বে।
এদিকে, নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার কারণে এলাকার একাধিক স্কুল, মসজিদ, মন্দির, মাঠ, কবরস্থানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। চাষাবাদ অনুপযোগী হয়ে পড়ছে হাজার হাজার একর জমি।
সাতজান মৌজার নদী খনন ও ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ পানি নিষ্কাশন স্ট্রাকচার নির্মাণ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ প্রদান এলাকার সেচ ও কৃষিকাজে সহায়ক অবকাঠামো তৈরি নদীসংলগ্ন এলাকায় গাইড ওয়াল প্রোটেকশন বাঁধ নির্মাণের দাবী জানান।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সাতজান মৌজার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে।
এ ব্যাপারে নীলফামারী পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, সাতজান মৌজার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা আমরা একাধিকবার পরিদর্শন করেছি । ভাঙনের মাত্রাবিবেচনায় জরুরি কাজ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখপূর্বক উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে । আশা করছি দ্রুত সময়ে অনুমোদন পেয়ে জরুরি কাজ বাস্তবায়ন শুরু করতে পারবো। ভাঙ্গন কবলিত মানুষকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুজ্জামান জানান, নাউতারা ইউনিয়নের সাতজান মৌজায় নদীর ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে এ বিষয়ে আমি দেখেছি আমি নীলফামারী পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলীকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানিয়েছি।