এম.এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বগুড়ার ধুনট উপজেলার পাকুড়ীহাটা গ্রামের আদম ব্যবসায়ী সোহান মিয়ার (২৮) প্রতারণার ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে একই এলাকার সাতটি পরিবার। অভিযোগ রয়েছে, বিদেশে ভালো চাকরির প্রলোভনে ফাঁসিয়ে তাদের কাছ থেকে কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে সোহান ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগীরা হলেন -- মনির মন্ডল (২৫), লুতফর রহমান (৪৮), বাবু মন্ডল (৩৫), সুমন (২৫), ও আলামিন (২৮)। তাদের দাবি, সৌদি আরবে উচ্চ বেতনের ড্রাইভিং ও অন্যান্য চাকরির কথা বলে সোহান মিয়া, তার বাবা তোতা মিয়া, মা শিউলি খাতুন, ও বোন সনি আক্তার এবং রনি খাতুন মিলে সাতজনের কাছ থেকে প্রায় ৫৪ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন।
ভুক্তভোগী সুমন জানান, ‘‘সোহান মিয়ার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। সে আমাকে মোটা অংকের বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে সৌদি আরবে পাঠায়। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি আমার কাগজপত্র ভুয়া। পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যায়, আমি জেল খেটে কষ্ট করে দেশে ফিরে এসেছি।’’
অন্যদেরও অভিযোগ, বিদেশে পাঠানোর পর তাদের কোনো কাজের ব্যবস্থা করা হয়নি, বরং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কেউ টাকা না দিলে সৌদি আরবের পুলিশের মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখানো হয়, এমনকি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকিও দেওয়া হয়।
দেশে ফিরে আসার পর টাকা চাইলে আদম ব্যবসায়ী ও তার পরিবারের সদস্যরা হুমকি-ধামকি ও মারধর করে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। এ বিষয়ে ধুনট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সোহান মিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘‘অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ভুক্তভোগীরা নিজেরা কাজ না করে দেশে ফিরে এসে এখন টাকার জন্য আমাদের হয়রানি করছে।’’
ধুনট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতারিত পরিবারগুলোর দাবি, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন দ্রুত তদন্ত করে তাদের ন্যায্য পাওনা ফেরতের ব্যবস্থা করে।