হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: হোসেনপুর উপজেলার দক্ষিণ গোবিন্দপুর, পানান, চরগাঙ্গাটিয়া, বলিয়াচর, সিদলা, জিনারী ও পুমদী এলাকায় আমন ধানে মাজরাপোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ধান ক্ষেতে ইঁদুরও কামড় দিয়ে ফসল নষ্ট করছে। কৃষকরা ভেজাল কীটনাশকের কারণে ফসল রক্ষা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করছেন। দক্ষিণ গোবিন্দপুরের কৃষক খোকন মিয়া বলেন, একদিকে মাজরাপোকা, অন্যদিকে ইঁদুরের আক্রমণ। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। দোকান থেকে যে ওষুধ কিনছি, মনে হয় ভেজাল। একই এলাকার সোহরাব মিয়া বলেন, মাঠে দিনে-রাতে ইঁদুর হানা দিচ্ছে। ফাঁদ পেতেও কাজ হচ্ছে না। কৃষি অফিসের তদারকি নেই বলেই ক্ষতি বাড়ছে। আরেক কৃষক নবেদ আলী জানান, ধানের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে, শীষে দানা আসছে না। কয়েকবার অভিযোগ দিয়েও কেউ আসেনি। বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য আলাল মিয়া বলেন, সরকারি তদারকি যথাযথভাবে নেই। মাঠে গিয়ে কৃষকের সমস্যা শুনছে এমন কর্মকর্তার অভাব দেখা যাচ্ছে। ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার এবং ইঁদুর-ভাজা ফসলের কারণে কৃষকেরা চরম ক্ষতির মুখে। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ দরকার।”
হোসেনপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ একেএম শাহজাহান বলেন, আমাদের সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে কাজ করছেন। কৃষক আমাদের কাছে আসলে আমরা সঠিক পরামর্শ দিই—মাজরাপোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করতে এবং ইঁদুরের আক্রমণ ঠেকাতে দেশীয় ফাঁদ ব্যবহারের পরামর্শ দিই। অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহারের কথাও জানাচ্ছি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কয়েক শ’ হেক্টর জমি মাজরাপোকার এবং ইঁদুরের আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা দ্রুত সরকারি সহায়তা, ভেজালবিরোধী অভিযান এবং মাঠ পর্যায়ের কার্যকর তদারকির দাবি জানিয়েছেন।