
আব্দুল মান্নান পটুয়াখালী প্রতিনিধি : আজ রবিবার সকাল ১১.০০ ঘটিকায় ,
অবৈধ সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা প্রতিরোধ, কঠোর মনিটরিং ও আইন প্রয়োগসহ দশ দফা দাবি জানিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজে র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
‘কোনও মাত্রাই নিরাপদ নয়, সিসা দূষণ বন্ধে কাজ করার এখনই সময়’—এই প্রতিপাদ্যে রবিবার সকালে সদর রোডে পিওর আর্থ এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন ইয়ুথনেট গ্লোবাল। এতে অর্ধশত তরুণ ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের প্রভাসক জনাব মো: রাসেল রেজা বলেন সিসা আমাদের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতিকর ,সিসা মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।শিশুদের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ব্যাহত হয় দীর্ঘমেয়াদী সিসা সংস্পর্শে কিডনি ও যকৃতের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিসা দূষণ বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
এছাড়া কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের সিনিয়র শিক্ষক জনাব আব্দুল মতিন হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন
জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে প্রতিবছর অক্টোবর মাসে পালিত হয় আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ। এ বছর সারাদেশের ৬৪ জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
মানববন্ধনে বলা হয়, পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়। শিশুদের স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিতে হবে, সিসাযুক্ত সব পণ্য থেকে সিসা দূর করতে হবে এবং একটি সিসামুক্ত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।
অনুষ্ঠান শেষে পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়কারী মো: জাহিদুল ইসলাম দশ দফা দাবি উত্থাপন করেন। তারা বলেন, সিসাকে দ্রুত “বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য” হিসেবে ঘোষণা, জনগণের রক্তে সিসার মাত্রা নির্ণয়ে জাতীয় জরিপ, শিশু ও গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ, ভোগ্যপণ্যে সিসা মেশানো বন্ধে নিরাপদ মানদণ্ড নির্ধারণ ও কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন।
ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়ক সোহানুর রহমান বলেন, “সিসা দূষণ বন্ধে জাতীয় পর্যায়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। যুব সমাজের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই সচেতনতা বাড়িয়ে সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
পিওর আর্থ বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিতালী দাশ বলেন,
“অবৈধ সিসা রিসাইক্লিং কারখানাগুলো বন্ধ করে নিরাপদ পুনর্ব্যবহার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।”
অংশগ্রহণকারীরা আরও দাবি জানান—সিসা শনাক্তে আধুনিক ল্যাব স্থাপন, অনিরাপদ ব্যাটারি রিসাইক্লিং কারখানা বন্ধ, দূষিত এলাকা পরিষ্কার, জাতীয় আইন ও কৌশল প্রণয়ন, গবেষণা বৃদ্ধি এবং গণসচেতনতা জোরদারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
ইয়ুথনেট পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়ক মো.জাহিদুল ইসলাম বলেন, “স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বাড়াতে আমরা কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজে এই আয়োজন করেছি যুবদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করার জন্য, কারন তরুনরাই পারে যুগন্তকারী পরিবর্তন ঘটাতে।
ইউনিসেফের তথ্যমতে, সিসা দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যায় বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বের চতুর্থ; প্রায় সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, সিসার সংস্পর্শে প্রতিবছর প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়, যার বেশির ভাগই শিশু। ২০১০ সাল থেকে এসডোর ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলে বিএসটিআই দ্বারা বাংলাদেশে গৃহস্থালির রঙে সিসার মাত্রা ৯০ পিপিএম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শিল্প রঙের ক্ষেত্রে এখনো কোনো নিয়ম ধার্য করা হয়নি, যা শ্রমিক এবং সাধারণ মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এ ছাড়া সিসা ব্যাটারি, খেলনা, বাসনপত্র প্রসাধনসামগ্রী এমনকি মসলায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে, যা আরো বেশি ঝুঁকি তৈরি করছে। তাই সব ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ করা জরুরি।
ইয়ুথনেট গ্লোবাল পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ভলান্টিয়ার ,মো: রাহাত, লিমা, মোমো, রেজাউল ইসলাম রবিন , মো: সাইফুল ইসলাম ইমন ,মো: সাবিক সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।





















