জাহাঙ্গীর আলম ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার অধীন আখাউড়া উপজেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার লক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুর থেকে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানস্থল ছিল সাংবাদিকদের মিলনমেলায় পরিণত।
সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন—
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সরেজমিন বার্তা’র ব্যুরো চিফ, সাংবাদিক এনামুল হক আরিফ।এবং সঞ্চালনা করেন—বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় দৈনিক “বর্তমান” পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি, সাংবাদিক আবু তাহের।উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠান শুরু হলে একে একে বিভিন্ন উপজেলা থেকে সাংবাদিকরা অংশ নিতে থাকেন। ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া, অনলাইন পোর্টাল এবং স্যাটেলাইট টিভির অসংখ্য প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।অতিথিদের উপস্থিতি
নুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—
সাংবাদিক আল-আমিন খন্দকার, অর্থ সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব—ব্রাহ্মণবাড়িয়া,সাংবাদিক আশিকুর রহমান, সহ-সভাপতি (জেলা) ও সাধারণ সম্পাদক (সদর উপজেলা), প্রতিনিধি—এশিয়ান টিভি,সাংবাদিক কাজী আরিফ, দপ্তর সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রেসক্লাব—ব্রাহ্মণবাড়িয়া; বিশেষ প্রতিনিধি, দৈনিক বর্তমান কথা,আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব বিজয়নগর উপজেলার সভাপতি সাংবাদিক সেলিম মিয়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিজয়নগর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম সহ অন্যান্য সাংবাদিক নেতা-কর্মী, সম্পাদক, প্রতিবেদকসহ বহু গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।দুপুর থেকে অনুষ্ঠানস্থলে সাংবাদিকদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে, যার ফলে পুরো পরিবেশটিতে এক আত্মীয়তা ও ঐক্যের আবহ তৈরি হয়।বক্তব্য—মূল আলোচনা,সাধারণ সম্পাদক আবু তাহেরের বক্তব্য
তিনি বলেন—বাংলাদেশ প্রেসক্লাব দেশের অন্যতম বৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন। এখানে পেশিশক্তির কোনো স্থান নেই। সাংবাদিকরা তাদের কলম ও কাগজের শক্তি দিয়ে সমাজের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অপরাধ উন্মোচন করে থাকেন। সত্য প্রকাশই আমাদের প্রধান দায়িত্ব।”
অর্থ সম্পাদক আল-আমিন খন্দকারের বক্তব্য
তিনি বলেন—কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাংবাদিক ফরিদ খান এবং জেলা শাখার সভাপতি সাংবাদিক এনামুল হক আরিফের নেতৃত্বে সংগঠনটি দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। যেখানে দুর্নীতি—সেখানে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সর্বদা শক্ত অবস্থানে থাকে।”
সভাপতি এনামুল হক আরিফের বিস্তৃত দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য,সভাপতি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই বলেন—
“সাংবাদিক জাতির চতুর্থ স্তম্ভ। আর আজ সেই চতুর্থ স্তম্ভ নানা প্রকার হুমকি, নির্যাতন ও আক্রমণের শিকার হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, মামলা, হয়রানি, নির্যাতন ও এমনকি হত্যার ঘটনা ঘটছে—এটি গণতন্ত্রের জন্য ভয়াবহ।”তিনি আরও বলেন—“সাংবাদিকরা সমাজের বিবেক। সাংবাদিক রয়েছে বলেই সমাজে অন্যায়ের তথ্য বেরিয়ে আসে, প্রশাসন সচেতন হয়, জনগণ সত্য জানতে পারে। আমরা যদি কলম থামিয়ে দিই—দেশের কোনো স্তরই ভালো থাকবে না।”তিনি প্রশাসনের প্রতি শক্ত অবস্থানে আহ্বান জানিয়ে বলেন—
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সাংবাদিক নিরাপদ না হলে সমাজ নিরাপদ নয়, রাষ্ট্রও নিরাপদ নয়।”সাংবাদিক ঐক্যের ওপর সভাপতির জোরালো বক্তব্য
তিনি আরও বলেন—“সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ঐক্য। যদি সাংবাদিকেরা বিভক্ত হয়ে যায়—তাহলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদক ও অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই দুর্বল হয়ে পড়বে। কিন্তু আমরা যদি এক হয়ে যাই—তাহলে অন্যায় কোনদিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না।”
তিনি আরও যোগ করেন—
“ঐক্যবদ্ধ সাংবাদিক সমাজ কখনো ভয় পায় না।”“সত্য, ন্যায় ও মানুষের অধিকার রক্ষায় ঐক্যই সাংবাদিকদের ধর্ম ।”“গণমাধ্যম শক্তিশালী হতে হলে সাংবাদিকদের হাত ধরে—একে অপরের শক্তি হয়ে দাঁড়াতে হবে।” সাংবাদিকদের দায়িত্ব ও নৈতিকতা,তিনি বলেন—“আপনাদের কলম,জনগণের কণ্ঠস্বর। যেখানেই অন্যায়, অবিচার, নির্যাতন, মাদক, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন—সেখানে আপনাদের কলম চলবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কখনো আপোষ করা যাবে না।”তিনি নবনির্বাচিত সদস্যদের উদ্দেশে বলেন—“আপনারা যারা নতুনভাবে বাংলাদেশ প্রেসক্লাব পরিবারের সদস্য হলেন—মনে রাখবেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলমই আমাদের শক্তি। সত্য, ন্যায় ও মানবতার পক্ষে সাংবাদিকরা কখনো মাথা নত করে না।”তিনি আরও বলেন—
“বাংলাদেশ প্রেসক্লাব সরকারি নিবন্ধিত দেশের সর্ববৃহৎ সাংবাদিক সংগঠন। এর প্রতিটি সদস্য জানে কিভাবে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের মোকাবেলা করতে হয়। আমাদের লক্ষ্য—দেশ, সমাজ ও মানুষের কল্যাণ।”আখাউড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা,সভাপতি এনামুল হক আরিফ নবনির্বাচিত কমিটির নাম ঘোষণা করেন —১. মোঃ হুমায়ুন কবির – সভাপতি
২. লায়ন রাকেশ কুমার ঘোষ – সিনিয়র সহ-সভাপতি
৩. মোঃ মামুন মিয়া – সহ-সভাপতি
৪. মোঃ হেলাল মিয়া – সহ-সভাপতি
৫. নজরুল ইসলাম – সাধারণ সম্পাদক,৬. মোঃ রাশেদ আল শাহারিয়া – যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,৭. মোঃ হাবিবুর রহমান – সাংগঠনিক সম্পাদক,৮. মোঃ রোমান মিয়া – সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক,৯. মোঃ হাসান রহমান – অর্থ সম্পাদক,১০. মোঃ মেহেদি হাসান – দপ্তর সম্পাদক,১১. এডভোকেট জসিম – আইন বিষয়ক সম্পাদক,১২. মোঃ দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী – প্রচার সম্পাদক,১৩. মোহাম্মদ মাসুদ মোল্লা – ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক,১৪. মোছাঃ ফাবলিহা জাহান – মহিলা বিষয়ক সম্পাদক,১৫. মোছাঃ বকুল আক্তার – সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক
১৬. মোঃ সোহরাব হোসেন – কার্যনির্বাহী সদস্য,১৭. মোঃ সোহাগ মিয়া – সাধারণ সদস্য,১৮. মোঃ ইয়াসমিন উদ্দিন রিপন – সাধারণ সদস্য,১৯. মোঃ কামরুল হাসান – সাধারণ সদস্য,সহ আরও অনেকে।অনুষ্ঠানের সমাপ্তি
কমিটি ঘোষণা শেষে সভাপতি সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন—“সাংবাদিকদের ঐক্য, সত্য ও সাহসিকতাই বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের মূল শক্তি। আমরা একসঙ্গে থাকলে দেশের কোনো অপশক্তিই সাংবাদিকদের দমাতে পারবে না।”এরপর তিনি অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করেন।