, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পাঁচবিবির ধরঞ্জীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেঞ্চে বসা নিয়ে তর্কে এক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে আহত ৫ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আখাউড়া উপজেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুর-০১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুন:র্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ৫০ জন কৃষককে কীটনাশক স্প্রে মেশিন ও ২৫ জন কৃষককে ধান ঝাড়ার মেশিন বিতরণ সীমান্তে গুজব ও চোরাচালান রুখতে গণমাধ্যমের সহায়তা চায় বিজিবি মোরেলগঞ্জে জলবায়ু ও সামাজিক সচেতনতা নিয়ে কোডেকের নতুন কমিটি গঠনে আলোচনা সভা র্ণিল আয়োজনে মেহেরপুর সরকারি কলেজে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক উৎসব আশাশুনির আনুলিয়ায় এমপি প্রার্থী রবিউল বাশারের নির্বাচনী প্রচারনা,শোডাউন ও পথসভা কালীগঞ্জে জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

‎লালমনিরহাটে বিয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে উধাও নববধূ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

রাতে বিয়ে করে সকাল হতেই স্বামীর বাড়ির নগদ টাকা স্বর্ণালংকার চুরি করে পালিয়েছেন নববধূ ও তার খালাত বোন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী হোসেন আলী। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় এ লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

‎ভুক্তভোগী হোসেন আলী আদিতমারী উপজেলার তালুক পলাশী গ্রামের খিজির মামুদের ছেলে। অভিযুক্ত নববধূ রুমানা খাতুন (৩০) একই উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার এনছার আলীর স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে। অপর অভিযুক্তরা হলেন, বিয়ের ঘটক একই এলাকার তালুক পলাশী গ্রামের জোবাইদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও লালমনিরহাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার।

‎অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , এক বছর আগে প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায় দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নেন কৃষক হোসেন আলী। ঘটক জোবাইদুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম বিয়ে দেওয়ার কথা বলে বুধবার (১৪ মে) হোসেন আলীকে ডেকে নিয়ে লালমনিরহাট শহরে নিয়ে যান। সেখানে পাত্রী হিসেবে স্বামী পরিত্যাক্তা রুমানা খাতুনকে দেখালে তার পছন্দ হয় এবং তাৎক্ষণিক তাদেরকে কাজী আমজাদ হোসেনের নিকাহ রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ দেন।

‎বিয়ের পর নববধূ রুমানাকে নিয়ে রাতে বাড়িতে ফিরতে চাইলে তাদের সাথে আসেন ঘটক জোবাইদুলের মেয়ে। পরদিন সকালে স্বামী হোসেন আলীর ঘরে থাকা এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও দেড় ভড়ি স্বর্ণালংকার নিয়ে ঘটকের মেয়েসহ নববধূ তার বাবা অসুস্থতার অজুহাতে চলে যায়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও না আসায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয় বর হোসেন আলীর। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ঘরে গচ্ছিত থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার নেই।

‎ঘটনার পর থেকে ঘটকদের কাছে গেলেও তারা কোনো পাত্তা দেননি। বিবাহের নকল চাইতে গেলে নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার তাদের নকল সরবরাহ না করে উল্টো হুমকি দেন।

অবশেষে বর হোসেন আলী বুঝতে পারেন টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করতেই এই চক্রটি বিয়ের নাটক তৈরি করে। নববধূ ও তার সাথে আসা ঘটকের মেয়ে এসব চুরি করে পুরো চক্রটি তা ভাগবাটোয়ারা করেছেন।

চোরাই টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করতে নিকাহ রেজিস্টার ও নববধূ রুমানাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার বিকেলে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর হোসেন আলী।

‎বাড়িতে তামাক বিক্রির টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল। এসব চুরি করতে তারা বিয়ের নাটক তৈরি করে আমার বাড়িতে স্ত্রী হিসেবে পাঠায় রুমানা ও ঘটকের মেয়েকে। বিয়ে দেওয়ার বখশিস হিসেবে ঘটক জোবাইদুল টাকাও নিয়েছেন দশ হাজার। তারা মূলত চুরি করতে বিয়ের নাটক তৈরি করেছে।

‎অভিযুক্ত ঘটকে জোবাইদুলকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। নববধূ রুমানা খাতুনের ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুমানাসহ এ চক্রটির কাজই হলো বিয়ের নামে মানুষের সাথে প্রতারণা ও জিম্মি করে অর্থ আদায় করা। তাই স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করে না রুমানা।

‎লালমনিরহাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, রুমানা হোসেন আলী নামে কারও বিবাহ রেজিস্ট্রি করা হয়নি। তারা অহেতুক আমার নাম বলতে পারে।

‎আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, এটি চোর চক্রের নতুন কোনো কৌশল হতে পারে। অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয়

পাঁচবিবির ধরঞ্জীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত

‎লালমনিরহাটে বিয়ের নাটক সাজিয়ে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে উধাও নববধূ

প্রকাশের সময় : ০৩:২৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

লালমনিরহাট প্রতিনিধি:

রাতে বিয়ে করে সকাল হতেই স্বামীর বাড়ির নগদ টাকা স্বর্ণালংকার চুরি করে পালিয়েছেন নববধূ ও তার খালাত বোন। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী হোসেন আলী। শুক্রবার (১৬ মে) বিকেলে লালমনিরহাটের আদিতমারী থানায় এ লিখিত অভিযোগ করেন তিনি।

‎ভুক্তভোগী হোসেন আলী আদিতমারী উপজেলার তালুক পলাশী গ্রামের খিজির মামুদের ছেলে। অভিযুক্ত নববধূ রুমানা খাতুন (৩০) একই উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার এনছার আলীর স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে। অপর অভিযুক্তরা হলেন, বিয়ের ঘটক একই এলাকার তালুক পলাশী গ্রামের জোবাইদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম ও লালমনিরহাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার।

‎অভিযোগ সূত্রে জানা যায় , এক বছর আগে প্রথম স্ত্রীর সাথে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায় দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নেন কৃষক হোসেন আলী। ঘটক জোবাইদুল ইসলাম ও রবিউল ইসলাম বিয়ে দেওয়ার কথা বলে বুধবার (১৪ মে) হোসেন আলীকে ডেকে নিয়ে লালমনিরহাট শহরে নিয়ে যান। সেখানে পাত্রী হিসেবে স্বামী পরিত্যাক্তা রুমানা খাতুনকে দেখালে তার পছন্দ হয় এবং তাৎক্ষণিক তাদেরকে কাজী আমজাদ হোসেনের নিকাহ রেজিস্ট্রি অফিসে নিয়ে এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিবাহ দেন।

‎বিয়ের পর নববধূ রুমানাকে নিয়ে রাতে বাড়িতে ফিরতে চাইলে তাদের সাথে আসেন ঘটক জোবাইদুলের মেয়ে। পরদিন সকালে স্বামী হোসেন আলীর ঘরে থাকা এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও দেড় ভড়ি স্বর্ণালংকার নিয়ে ঘটকের মেয়েসহ নববধূ তার বাবা অসুস্থতার অজুহাতে চলে যায়। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও না আসায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় সন্দেহ হয় বর হোসেন আলীর। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে ঘরে গচ্ছিত থাকা টাকা ও স্বর্ণালংকার নেই।

‎ঘটনার পর থেকে ঘটকদের কাছে গেলেও তারা কোনো পাত্তা দেননি। বিবাহের নকল চাইতে গেলে নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার তাদের নকল সরবরাহ না করে উল্টো হুমকি দেন।

অবশেষে বর হোসেন আলী বুঝতে পারেন টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করতেই এই চক্রটি বিয়ের নাটক তৈরি করে। নববধূ ও তার সাথে আসা ঘটকের মেয়ে এসব চুরি করে পুরো চক্রটি তা ভাগবাটোয়ারা করেছেন।

চোরাই টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার করতে নিকাহ রেজিস্টার ও নববধূ রুমানাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার বিকেলে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বর হোসেন আলী।

‎বাড়িতে তামাক বিক্রির টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল। এসব চুরি করতে তারা বিয়ের নাটক তৈরি করে আমার বাড়িতে স্ত্রী হিসেবে পাঠায় রুমানা ও ঘটকের মেয়েকে। বিয়ে দেওয়ার বখশিস হিসেবে ঘটক জোবাইদুল টাকাও নিয়েছেন দশ হাজার। তারা মূলত চুরি করতে বিয়ের নাটক তৈরি করেছে।

‎অভিযুক্ত ঘটকে জোবাইদুলকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। নববধূ রুমানা খাতুনের ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ থাকায় তার সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রুমানাসহ এ চক্রটির কাজই হলো বিয়ের নামে মানুষের সাথে প্রতারণা ও জিম্মি করে অর্থ আদায় করা। তাই স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করে না রুমানা।

‎লালমনিরহাট পৌরসভার নিকাহ রেজিস্টার কাজী আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, রুমানা হোসেন আলী নামে কারও বিবাহ রেজিস্ট্রি করা হয়নি। তারা অহেতুক আমার নাম বলতে পারে।

‎আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর বলেন, এটি চোর চক্রের নতুন কোনো কৌশল হতে পারে। অভিযোগটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।