, শুক্রবার, ২৯ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত ২ লাখ ৩০ হাজার পশু

খাজা রাশেদ, লালমনিরহাট থেকে :

লালমনিরহাটে ঈদ কে সামনে রেখে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। প্রস্তুত রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার পশু। মাঝারি গরুর সংখ্যাই বেশী। জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা যতই ঘনিয়ে আসছে। ততই জমজমাট হয়ে উঠেছে লালমনিরহাটের কোরবানির পশুর হাটগুলো। লালমনিরহাটের ঐতিহ্যবাহী বড়বাড়ী হাটসহ বিভিন্ন হাটে ইতিমধ্যেই ভিড় জমেছে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার ব্যাপক সরবরাহ। স্থানীয় প্রশাসন ও খামারিদের আশা। এবারের ঈদে লালমনিরহাট জেলার অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও কোরবানির পশু পাঠানো সম্ভব হবে।

‎উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী ওই জেলার ৫টি উপজেলার সাপ্তাহিক পশুর হাটগুলো এখন প্রাণচাঞ্চল্যে হয়ে উঠেছে। উল্লেখযোগ্য হাটের মধ্যে রয়েছে বড়বাড়ী, দুড়াকুটি, নবাবের হাট (বিডিআর হাট),নয়ারহাট, শিয়ালখোয়া, চাপারহাট, দইখাওয়া ও হাতীবান্ধার বড়খাতা।

‎সরেজমিনে বড়বাড়িহাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি গরুর উপস্থিতি এবং বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত পুরো হাট। সকাল ৮টার মধ্যেই গরুতে ঠাসা হয়ে পড়ে পুরো প্রাঙ্গণ। গরুর দাম ৬০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হলেও ক্রেতাদের নজর মূলত মাঝারি আকৃতির গরুর দিকেই।
‎ভিড় বাড়ছে, আগেভাগেই কেনাকাটায় ঝোঁক বাড়ছে। গরু কিনতে আসা আবুল হোসেন বলেন, ঈদের আগে দাম চড়া থাকে। তাই আগে-ভাগেই এসেছি। আজ বুধবার ৭৫ হাজার টাকায় একটা গরু কিনেছি। তবে,দালালদের কারণে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছি।মোঃ সবুর আলী নামের আরেক ক্রেতা জানান,আমরা ৭জন মিলে ৭০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। একসাথে কেনা আমাদের জন্য সাশ্রয়ী হয়েছে।

‎ছাগল কিনতে আসা মিলন মিয়া জানান,১০ হাজার টাকায় একটি খাসি নিয়েছি। হাটে ছাগলের সরবরাহ ভালোই।

‎বিক্রি হচ্ছে মাঝারি গরু,বড় গরুর তুলনায় বেশি।
‎কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী থেকে আসা খামারি ইউনুস আলী জানান,৫ টি গরু এনেছেন। যার মধ্যে ৪টি মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হলেও একটি বড় গরু এখনও বিক্রি হয়নি।পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের হায়দার আলী বলেন, ঈদের এখনো সময় আছে। তাই, আগে ভাগেই এসেছি। তবে, দামে একটু ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করছি।

‎বড়বাড়ি ইউনিয়নের খামারি আলমগীর ইসলাম জানান,১০-১২ মণের  ৩টি গরু এনেছি। প্রত্যাশা ছিল প্রতিটি গরু ২ লাখ ৬০ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজারে বিক্রি হবে। কিন্তু,ক্রেতারা কম দামে কিনতে চাচ্ছেন। লালমনিরহাটের খামারিরা বলছেন,গো-খাদ্য ও উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রিতে আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। লালমনিরহাট সদর উপজেলার আফসার মিয়া  জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছরে খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু,দাম তেমন বাড়েনি।নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধিতে গুরুত্ব দিয়ে জেলার পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জালনোট শনাক্তকরণ যন্ত্রসহ পুলিশি টহল ও মেডিকেল টিমের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।

‎লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান,এবার বেশিরভাগ খামারি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করেছেন। হরমোন বা ইনজেকশনের ব্যবহার কমেছে। মেডিকেল টিম নিশ্চিত করছে যেন কোনো অসুস্থ পশু হাটে না আসে।
‎তিনি আরও জানান, লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলায়  প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা পূরণের পর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গরু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

জনপ্রিয়

লালমনিরহাটে ঈদ সামনে রেখে প্রস্তুত ২ লাখ ৩০ হাজার পশু

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

খাজা রাশেদ, লালমনিরহাট থেকে :

লালমনিরহাটে ঈদ কে সামনে রেখে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। প্রস্তুত রয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার পশু। মাঝারি গরুর সংখ্যাই বেশী। জানা গেছে, পবিত্র ঈদুল আজহা যতই ঘনিয়ে আসছে। ততই জমজমাট হয়ে উঠেছে লালমনিরহাটের কোরবানির পশুর হাটগুলো। লালমনিরহাটের ঐতিহ্যবাহী বড়বাড়ী হাটসহ বিভিন্ন হাটে ইতিমধ্যেই ভিড় জমেছে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়ার ব্যাপক সরবরাহ। স্থানীয় প্রশাসন ও খামারিদের আশা। এবারের ঈদে লালমনিরহাট জেলার অভ্যন্তরীন চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলেও কোরবানির পশু পাঠানো সম্ভব হবে।

‎উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী ওই জেলার ৫টি উপজেলার সাপ্তাহিক পশুর হাটগুলো এখন প্রাণচাঞ্চল্যে হয়ে উঠেছে। উল্লেখযোগ্য হাটের মধ্যে রয়েছে বড়বাড়ী, দুড়াকুটি, নবাবের হাট (বিডিআর হাট),নয়ারহাট, শিয়ালখোয়া, চাপারহাট, দইখাওয়া ও হাতীবান্ধার বড়খাতা।

‎সরেজমিনে বড়বাড়িহাট ঘুরে দেখা গেছে, দেশি গরুর উপস্থিতি এবং বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত পুরো হাট। সকাল ৮টার মধ্যেই গরুতে ঠাসা হয়ে পড়ে পুরো প্রাঙ্গণ। গরুর দাম ৬০ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হলেও ক্রেতাদের নজর মূলত মাঝারি আকৃতির গরুর দিকেই।
‎ভিড় বাড়ছে, আগেভাগেই কেনাকাটায় ঝোঁক বাড়ছে। গরু কিনতে আসা আবুল হোসেন বলেন, ঈদের আগে দাম চড়া থাকে। তাই আগে-ভাগেই এসেছি। আজ বুধবার ৭৫ হাজার টাকায় একটা গরু কিনেছি। তবে,দালালদের কারণে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছি।মোঃ সবুর আলী নামের আরেক ক্রেতা জানান,আমরা ৭জন মিলে ৭০ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। একসাথে কেনা আমাদের জন্য সাশ্রয়ী হয়েছে।

‎ছাগল কিনতে আসা মিলন মিয়া জানান,১০ হাজার টাকায় একটি খাসি নিয়েছি। হাটে ছাগলের সরবরাহ ভালোই।

‎বিক্রি হচ্ছে মাঝারি গরু,বড় গরুর তুলনায় বেশি।
‎কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী থেকে আসা খামারি ইউনুস আলী জানান,৫ টি গরু এনেছেন। যার মধ্যে ৪টি মাঝারি আকারের গরু বিক্রি হলেও একটি বড় গরু এখনও বিক্রি হয়নি।পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের হায়দার আলী বলেন, ঈদের এখনো সময় আছে। তাই, আগে ভাগেই এসেছি। তবে, দামে একটু ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করছি।

‎বড়বাড়ি ইউনিয়নের খামারি আলমগীর ইসলাম জানান,১০-১২ মণের  ৩টি গরু এনেছি। প্রত্যাশা ছিল প্রতিটি গরু ২ লাখ ৬০ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজারে বিক্রি হবে। কিন্তু,ক্রেতারা কম দামে কিনতে চাচ্ছেন। লালমনিরহাটের খামারিরা বলছেন,গো-খাদ্য ও উৎপাদন খরচ বাড়লেও বিক্রিতে আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না। লালমনিরহাট সদর উপজেলার আফসার মিয়া  জানান,গত বছরের তুলনায় এ বছরে খরচ অনেক বেড়েছে। কিন্তু,দাম তেমন বাড়েনি।নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধিতে গুরুত্ব দিয়ে জেলার পশুর হাটগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জালনোট শনাক্তকরণ যন্ত্রসহ পুলিশি টহল ও মেডিকেল টিমের তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে।

‎লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান,এবার বেশিরভাগ খামারি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করেছেন। হরমোন বা ইনজেকশনের ব্যবহার কমেছে। মেডিকেল টিম নিশ্চিত করছে যেন কোনো অসুস্থ পশু হাটে না আসে।
‎তিনি আরও জানান, লালমনিরহাট জেলার ৫ উপজেলায়  প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা পূরণের পর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক গরু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।