, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পঞ্চগড়ের বোদা বলরাম হাট বানিয়াপাড়ায় একটি লাশ উদ্ধার ডিমলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্সের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু কালিয়াকৈরে সেভয় কোম্পানির আইসক্রিম খেয়ে শিশু অসুস্থ কালিয়াকৈরে যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু: এলাকায় উত্তেজনা কলাপাড়া পৌর ওলামা দলের কর্মী সভা নেশার টাকা না শশুর বাড়িতে আগুন ‎লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে ভুয়া ডাক্তারকে তিন মাসের কারাদণ্ড বগুড়া শহরের কুখ্যাত হাড্ডিপট্টির ‘আলিফ আইরোন’ থেকে চোরাই মাল উদ্ধার — গ্রেপ্তার ২ ‎ বগুড়া শেরপুরে হিজাব নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ছাত্রীসংস্থার মানববন্ধন ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে এক উদীয়মান নেতৃত্ব দিতে চান — প্রভাষক আতাউর রহমান

৩ হাজার গোরস্তান খোদক মনু মিয়া আর নাই

  • প্রকাশের সময় : ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • ১৮৭ পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, তিন হাজার মানুষের শেষ বিদায়ের নিঃস্বার্থ সাথী, ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে খ্যাত মো. মনু মিয়া (৬৭) আর নেই।আজ শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের মহান কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন শেষ ঠিকানার কারিগর নামে।প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কবর খুঁড়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষের। একটি ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে—এই কাজের জন্যই তিনি একসময় দোকান বিক্রি করে কিনেছিলেন ১টি প্রিয় ঘোড়া।ঢাকার আইনজীবী এবং মনু মিয়ার এলাকার সন্তান অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা জানান, কিছুদিন আগে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মনু মিয়া। সেই সময় দুর্বৃত্তরা তার বহু বছরের সঙ্গী প্রিয় ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।রোকন রেজা বলেন, আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গেলে বলেছিলাম—অনেকে আপনাকে নতুন ঘোড়া কিনে দিতে চায়। তখন তিনি বলেছিলেন, আমি এই কাজ করি শুধু আল্লাহকে খুশি করতে। মানুষের কাছ থেকে কিছু নিতে চাই না।ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন ঠাকুর বলেন, ঘোড়ার মৃত্যুর পর থেকেই মনু মিয়া শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে এলেও আর আগের মতো হয়ে উঠেননি। তার মৃত্যুতে আমরা একজন দয়ার সাগর, নিঃস্বার্থ মানুষকে হারালাম। এমন মানুষের অভাব কখনো পূরণ হওয়ার নয়।স্থানীয়রা জানায়, মনু মিয়া শুধু একজন কবর খননকারী নন—তিনি ছিলেন মানবিকতার প্রতীক। মৃত্যুর পরও বহু মানুষের দোয়া ও শ্রদ্ধায় বেঁচে থাকবেন তিনি।

জনপ্রিয়

পঞ্চগড়ের বোদা বলরাম হাট বানিয়াপাড়ায় একটি লাশ উদ্ধার

৩ হাজার গোরস্তান খোদক মনু মিয়া আর নাই

প্রকাশের সময় : ০৭:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার জয়সিদ্ধি ইউনিয়নের আলগাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা, তিন হাজার মানুষের শেষ বিদায়ের নিঃস্বার্থ সাথী, ‘শেষ ঠিকানার কারিগর’ নামে খ্যাত মো. মনু মিয়া (৬৭) আর নেই।আজ শনিবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।জয়সিদ্ধি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাহাউদ্দিন ঠাকুর তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।মনু মিয়ার মৃত্যুতে এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। জীবনের প্রায় অর্ধশত বছর তিনি ব্যয় করেছেন কবর খননের মহান কাজে, বিনিময়ে কখনো কিছু চাননি। আশপাশের গ্রাম ও জেলাজুড়েও পরিচিত ছিলেন শেষ ঠিকানার কারিগর নামে।প্রায় ৪৯ বছর ধরে বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কবর খুঁড়েছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষের। একটি ঘোড়ার পিঠে চড়ে তিনি ছুটে যেতেন মৃতের বাড়িতে—এই কাজের জন্যই তিনি একসময় দোকান বিক্রি করে কিনেছিলেন ১টি প্রিয় ঘোড়া।ঢাকার আইনজীবী এবং মনু মিয়ার এলাকার সন্তান অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ রোকন রেজা জানান, কিছুদিন আগে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মনু মিয়া। সেই সময় দুর্বৃত্তরা তার বহু বছরের সঙ্গী প্রিয় ঘোড়াটিকে হত্যা করে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি।রোকন রেজা বলেন, আমি হাসপাতালে তাকে দেখতে গেলে বলেছিলাম—অনেকে আপনাকে নতুন ঘোড়া কিনে দিতে চায়। তখন তিনি বলেছিলেন, আমি এই কাজ করি শুধু আল্লাহকে খুশি করতে। মানুষের কাছ থেকে কিছু নিতে চাই না।ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন ঠাকুর বলেন, ঘোড়ার মৃত্যুর পর থেকেই মনু মিয়া শারীরিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে এলেও আর আগের মতো হয়ে উঠেননি। তার মৃত্যুতে আমরা একজন দয়ার সাগর, নিঃস্বার্থ মানুষকে হারালাম। এমন মানুষের অভাব কখনো পূরণ হওয়ার নয়।স্থানীয়রা জানায়, মনু মিয়া শুধু একজন কবর খননকারী নন—তিনি ছিলেন মানবিকতার প্রতীক। মৃত্যুর পরও বহু মানুষের দোয়া ও শ্রদ্ধায় বেঁচে থাকবেন তিনি।