
সামান্য বৃষ্টিতেই দুর্ভোগে পড়ছেন বগুড়া শেরপুর উপজেলার কাশিয়াবালা ও বিনোদপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। গ্রাম দুটির সংযোগকারী মূল সড়কটির দেড় কিলোমিটার দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চরম বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায় সড়কটি, চলাচল হয়ে পড়ে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন এই রাস্তায় স্কুলগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও অসুস্থ রোগীরা সীমাহীন কষ্টে চলাফেরা করছেন। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স বা যানবাহন চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। বৃষ্টি হলে ওই রাস্তায় পড়ে থাকা খানাখন্দে যানবাহন আটকে পড়া এখন যেন নিয়মিত ঘটনা।
কাশিয়াবালা গ্রামের সুশীল কুমার পাল বলেন, রাস্তাটির এমন অবস্থা অনেক বছর ধরে। কতবার অভিযোগ করলাম, কিছুই হয় না। সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা হয়ে যায়, বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না ঠিকমতো। শহরের সাথে আমাদের সংযোগ যেন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরেক বাসিন্দা আসিদুল বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণে বেশ কয়েকবার আশ্বাস দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান। কিন্তু যথাযথ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে আছি আমরা।
কাশিয়াবালা গ্রামের বাসিন্দা ও মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অনন্ত কুমার সরকার বলেন, ‘প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে। তাদের চলতে খুবই সমস্যা হয়। প্রায় সময়ই গাড়ি দুর্ঘটনা হয় এ রাস্তাতে। অসুস্থ কোনো ব্যক্তিকে দ্রুত হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই অনেক ভোগাস্তি নিয়েই আমাদের এ রাস্তা যাতায়াত করতে হয়।’
বিনোদপুর গ্রামের ব্যবসায়ী ইমদাদুল হক বলেন, ‘প্রতিদিনই আমাদের এ রাস্তা দিয়ে ব্যবসার কাজের জন্য চলাচল করতে হয়। বৃষ্টিতে রাস্তাটি একদম চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। একটি অটোগাড়ি উল্টে যায়। এতে মহিলা যাত্রী গুরুতর আহত হয়। তারপরও শত ভোগান্তি নিয়েই এ রাস্তা দিয়ে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করছি দ্রুত এ রাস্তা মেরামত করার ব্যবস্থা করেন।
সিএনজি চালক জুয়েল রানা ও রায়হান বলেন, ‘বাংলাদেশের মধ্যে মনে হয় এতো খারাপ রাস্তা আর নেই।জীবিকার তাগিদে আমাদের প্রতিনিয়ত গাড়ি নিয়ে রাস্তায় বের হতে হয়। রাস্তা খারাপের জন্য অনেক কষ্ট নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়।
জনপ্রতিনিধিরা যদি এ রাস্তাটি পাকাকরণ করতে না পারে তাহলে তারা যেন নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করে দেয়।
মির্জাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বলেন,দীর্ঘদিন হলো রাস্তাটি সংস্কারের চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা দ্রুত মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে কিন্তুু এই রাস্তার কিছু অংশ করতোয়া নদীতে ভেঙে যাওয়ায় সেখানে মেরামতের জন্য বড় ধরনের বরাদ্দের প্রয়োজন।