, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
পাঁচবিবির ধরঞ্জীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেঞ্চে বসা নিয়ে তর্কে এক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে আহত ৫ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আখাউড়া উপজেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুর-০১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুন:র্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ৫০ জন কৃষককে কীটনাশক স্প্রে মেশিন ও ২৫ জন কৃষককে ধান ঝাড়ার মেশিন বিতরণ সীমান্তে গুজব ও চোরাচালান রুখতে গণমাধ্যমের সহায়তা চায় বিজিবি মোরেলগঞ্জে জলবায়ু ও সামাজিক সচেতনতা নিয়ে কোডেকের নতুন কমিটি গঠনে আলোচনা সভা র্ণিল আয়োজনে মেহেরপুর সরকারি কলেজে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক উৎসব আশাশুনির আনুলিয়ায় এমপি প্রার্থী রবিউল বাশারের নির্বাচনী প্রচারনা,শোডাউন ও পথসভা কালীগঞ্জে জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা

 লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে—-বিধ্বস্ত হয়েছে চরাঞ্চল

 

এস.বি-সুজন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

 

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী। প্রবল স্রোতে বিধ্বস্ত হয়েছে চরাঞ্চলের একমাত্র চলাচলের মাটির বাইপাস সড়ক। পানির তোড়ে হু হু করে প্লাবিত হচ্ছে নীলফামারী ও লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। ইতোমধ্যে ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত, ভেসে গেছে মাছচাষিদের পুকুর।

 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটারের ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা অববাহিকায় জারি করা হয়েছে লাল সংকেত।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার শিঙ্গিমারী ও ধুপড়ি এলাকায় নদীর পানি ঢুকে পড়েছে বসতভিটায়। হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষজন নৌকা ও ভেলার ওপর নির্ভর করছে।

ডিমলা, জলঢাকা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও পাটগ্রামের চর ও দ্বীপচর এলাকায় ফসলি জমি, বাড়িঘর ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে বন্যার পরিধি আরও বাড়তে পারে।

ভারতের সিকিম, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার এলাকায় ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ভারতের দোমহনী পয়েন্টে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে।

 

ভারতের কালিম্পং জেলার তারখোলা এলাকায় ধসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল। তিস্তা ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তাও পানির নিচে। এতে বহু যাত্রী, পর্যটক ও পণ্যবাহী গাড়ির চালক দুর্ভোগে পড়েছেন।

 

গড্ডিমারী ইউনিয়নের শামসুল আলম জানান, উজানের পানি ঢুকে নিচু এলাকার ঘরবাড়ি প্লাবিত করেছে। গোবরধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, “এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে। এ বছর এখনো বড় বন্যা হয়নি, কিন্তু এখন যা দেখছি তাতে ভয় লাগছে।”

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্লুইচ গেট খোলা এবং লাল সংকেত জারি করা হয়েছে। নদীতীরবর্তী জনগণকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জনপ্রিয়

পাঁচবিবির ধরঞ্জীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত

 লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে—-বিধ্বস্ত হয়েছে চরাঞ্চল

প্রকাশের সময় : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 

এস.বি-সুজন, লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

 

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী। প্রবল স্রোতে বিধ্বস্ত হয়েছে চরাঞ্চলের একমাত্র চলাচলের মাটির বাইপাস সড়ক। পানির তোড়ে হু হু করে প্লাবিত হচ্ছে নীলফামারী ও লালমনিরহাটের বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা। ইতোমধ্যে ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত, ভেসে গেছে মাছচাষিদের পুকুর।

 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাত ৯টায় নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটারের ৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচ গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তিস্তা অববাহিকায় জারি করা হয়েছে লাল সংকেত।

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার শিঙ্গিমারী ও ধুপড়ি এলাকায় নদীর পানি ঢুকে পড়েছে বসতভিটায়। হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে গেছে বহু ঘরবাড়ি। স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষজন নৌকা ও ভেলার ওপর নির্ভর করছে।

ডিমলা, জলঢাকা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও পাটগ্রামের চর ও দ্বীপচর এলাকায় ফসলি জমি, বাড়িঘর ও রাস্তা পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে বন্যার পরিধি আরও বাড়তে পারে।

ভারতের সিকিম, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার এলাকায় ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ভারতের দোমহনী পয়েন্টে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ফলে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে।

 

ভারতের কালিম্পং জেলার তারখোলা এলাকায় ধসের কারণে বন্ধ হয়ে গেছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল। তিস্তা ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তাও পানির নিচে। এতে বহু যাত্রী, পর্যটক ও পণ্যবাহী গাড়ির চালক দুর্ভোগে পড়েছেন।

 

গড্ডিমারী ইউনিয়নের শামসুল আলম জানান, উজানের পানি ঢুকে নিচু এলাকার ঘরবাড়ি প্লাবিত করেছে। গোবরধন গ্রামের আব্দুর রশিদ বলেন, “এভাবে পানি বাড়তে থাকলে বড় ধরনের বন্যা হতে পারে। এ বছর এখনো বড় বন্যা হয়নি, কিন্তু এখন যা দেখছি তাতে ভয় লাগছে।”

 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্লুইচ গেট খোলা এবং লাল সংকেত জারি করা হয়েছে। নদীতীরবর্তী জনগণকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।