, রবিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পি আর (Proportional Representation) পদ্ধতি ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা

 

লেখক: সাদেকা তামান্না, প্রভাষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

পি আর হলো একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাতে আসন পায়। অর্থাৎ কোনো দল যদি জাতীয়ভাবে ৩০% ভোট পায়, তবে সংসদের প্রায় ৩০% আসন তাদের হয়ে যাবে। এই পদ্ধতিতে প্রার্থী নয় বরং ভোট হয় প্রধানত দলকেন্দ্রিক, যেখানে ভোটাররা সাধারণত কোনো দলের তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়।

 

১৮৫০ সালে ইংল্যান্ডে থমাস হেয়ার প্রথম পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব করেন। কারণ, তার ধারণা ছিল, শুধু বড় দল নয়, ছোট রাজনৈতিক দল ও সংখ্যালঘুরাও যেন প্রতিনিধিত্ব পায়। বিশ শতকের শুরুতে অনেক ইউরোপীয় দেশ, যেমন: বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো পি আর চালু করেন। এছাড়াও বর্তমানে ৮০টিরও বেশি দেশ, ইউরোপীয় অধিকাংশ দেশসহ, লাতিন আমেরিকার কিছু দেশ, আফ্রিকার কয়েকটি রাষ্ট্র ও দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল ও শ্রীলঙ্কার আংশিক ব্যবস্থা রয়েছে।

 

জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার সংসদ—সবই পি আর ভিত্তিক নির্বাচন করে। পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দুই ধরনের রূপ বিদ্যমান। যথা:
(i) Closed List PR: ভোটার কেবল দলের তালিকায় ভোট দেয়, আসন বণ্টন হলে দলের শীর্ষ তালিকার প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়।
(ii) Open List PR: ভোটাররা দলের তালিকার মধ্যে নির্দিষ্ট প্রার্থী বেছে নিতে পারেন।

 

পি আর পদ্ধতি মূলত বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বিভক্ত সমাজগুলোতে প্রতিনিধিত্বমূলক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতি মূলত FPTP (First Past The Post) বা একক সদস্যভিত্তিক আসন পদ্ধতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ডুভার্জের মতানুসারে, FPTP দুই দলীয় ব্যবস্থা তৈরি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বড় দলগুলো একধরনের কার্টেল পার্টি (Cartel Party)। পি আর চালু হলে এই কার্টেল ভেঙে যাবে। এছাড়াও পি আর পদ্ধতি বড় দলগুলোকে দুর্বল করার অন্যতম পদ্ধতি। যেমন: নেপালে পি আর চালুর ফলে অনেক ছোট দল সংসদে ঢুকেছে এবং প্রধান দুই দল দুর্বল হয়েছে। পি আর পদ্ধতিতে যদি নির্বাচন হয়, তবে যে নেতিবাচক সমস্যার সৃষ্টি হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো:
(i) সরকার গঠনে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে
(ii) অতিরিক্ত দলীয় খণ্ডীকরণ
(iii) ভোটার-প্রার্থীর সরাসরি সম্পর্ক দুর্বল হওয়া
(iv) চরমপন্থী দলের প্রবেশ
(v) নীতিনির্ধারণে ধীরগতি

 

তাত্ত্বিকভাবেও দেখা যায় যে,
(i) ডুভার্জের তত্ত্ব মতে, পি আর মানে বহুদলীয় ব্যবস্থা যা বড় দলের জন্য হুমকি।
(ii) কার্টেল পার্টির তত্ত্ব মতে, বড় দলগুলো সুবিধা হারাবে।
(iii) Rational Choice তত্ত্ব মতে, বড় দলের স্বার্থের সাথে পি আর সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
(iv) রাজনৈতিক সংস্কৃতি: বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পি আর সমর্থনযোগ্য নয়।

বাংলাদেশের জন্য পি আর পদ্ধতির ইতিবাচক প্রভাব হতে পারে:

 

১. সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে: বর্তমানে বড় দলগুলো সংসদে প্রভাব বিস্তার করে, ছোট দল বা স্বাধীন প্রার্থীরা প্রায় বাদ পড়ে যায়।পি আর পদ্ধতিতে প্রতিটি দলের আসন সংখ্যা তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে নির্ধারিত হবে। উদাহরণ: যদি কোনো দল জাতীয়ভাবে ১০% ভোট পায়, তবে সংসদে প্রায় ১০% আসন পাবে।

 

২. রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে: সংখ্যালঘু, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে। উদাহরণ: সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বা নারীভিত্তিক ছোট দলগুলো জাতীয় ভোটে কিছুটা অংশ নিলেও তারা সংসদে আসন পাবে।

 

৩. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা তৈরি হবে: একক দলীয় আধিপত্য কমে আসবে, জোট ভিত্তিক সরকার গঠিত হবে। এতে একে অপরকে সহ্য করা ও আলোচনা-সমঝোতার মাধ্যমে নীতি প্রণয়ন বাড়বে। উদাহরণ: ভারতের কেরালা রাজ্যে বা ইউরোপের অনেক দেশে জোট সরকার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল নীতি এনেছে।

 

৪. ভোটের মূল্য বৃদ্ধি পাবে: প্রত্যেক ভোটই আসনে রূপান্তরিত হতে পারে, ফলে ভোটাররা বঞ্চিত বা অকার্যকর বোধ করবে না। উদাহরণ: কোনো ভোট যদি হেরে যাওয়া প্রার্থীকে না এনে দেয়, তবুও সেই ভোট দলকে সংসদে আসন পেতে সাহায্য করবে।

 

৫. রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস পাবে: বর্তমানে জয়-পরাজয় নির্ভর প্রথম-আগে-আগে-পদ্ধতিতে (FPTP) এক ভোটের ব্যবধানেই কেউ সব পায় আবার কেউ কিছুই পায় না।কিন্তু পি আর পদ্ধতিতে সবাই কিছু না কিছু পায়, ফলে চরম প্রতিযোগিতা ও সহিংসতার প্রবণতা কমতে পারে।

 

৬. নীতিনির্ধারণে বহুমাত্রিকতা আসবে:
সংসদে একাধিক দল থাকায় নানা মতামত প্রতিফলিত হবে। উদাহরণ: পরিবেশ, নারী অধিকার বা শ্রমিক স্বার্থে ছোট দলগুলো সংসদে আলোচনা জোরদার করতে পারে। অর্থাৎ পি আর পদ্ধতি বাংলাদেশে ভোটের মানে বৃদ্ধি, রাজনৈতিক সহনশীলতা, সংখ্যালঘু ও ছোট দলের অংশগ্রহণ, এবং সহিংসতা কমানোর মতো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

 

বাংলাদেশের জন্য পি আর পদ্ধতির নেতিবাচক প্রভাব হতে পারে:

 

১. সরকার গঠনে অস্থিরতা: পি আর পদ্ধতির ফলে সরকার গঠনে অস্থিরতা দেখা দেবে। উদাহরণ: ইতালি বা ইসরায়েলে পি আর পদ্ধতিতে ছোট দলগুলোর প্রভাবের কারণে সরকার প্রায়শই ভেঙে যায়।

 

২. রাজনৈতিক খণ্ডীকরণ: সংসদে অনেক ছোট দল থাকলে নীতিনির্ধারণ জটিল হয়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘ সময় লাগবে এবং কার্যকর শাসন দুর্বল হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দলগুলোর মধ্যে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় এটি আরও সমস্যা তৈরি করতে পারে।

 

৩. নেতিবাচক প্রভাব: বিএনপির মতো বড় দলের জন্য এটি একটি নেতিবাচক সিদ্ধান্ত হবে এবং এর প্রভাবও নেতিবাচক হবে।

 

৪. চরমপন্থী ও আঞ্চলিক দলের উত্থান: পি আর পদ্ধতিতে সামান্য ভোট পেয়েও ছোট দলগুলো সংসদে আসতে পারবে। এতে চরমপন্থী, ধর্মীয় বা আঞ্চলিক বিভাজনমূলক দলগুলোর প্রভাব বাড়বে। এছাড়াও বাংলাদেশে এটি জাতীয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি হবে।

 

৫. ভোটার-প্রার্থী সম্পর্ক দুর্বল: পি আর পদ্ধতিতে ভোটার সরাসরি প্রার্থী নয়, দলের প্রতি ভোট দেয়। এতে এমপির জবাবদিহিতা নির্বাচিত এলাকায় ভোটারদের প্রতি কম হবে।

 

৬. প্রশাসনিক ও গণনা জটিলতা: পি আর পদ্ধতিতে আসন

জনপ্রিয়

পি আর (Proportional Representation) পদ্ধতি ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা

প্রকাশের সময় : ০২:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

 

লেখক: সাদেকা তামান্না, প্রভাষক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

পি আর হলো একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা যেখানে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাতে আসন পায়। অর্থাৎ কোনো দল যদি জাতীয়ভাবে ৩০% ভোট পায়, তবে সংসদের প্রায় ৩০% আসন তাদের হয়ে যাবে। এই পদ্ধতিতে প্রার্থী নয় বরং ভোট হয় প্রধানত দলকেন্দ্রিক, যেখানে ভোটাররা সাধারণত কোনো দলের তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়।

 

১৮৫০ সালে ইংল্যান্ডে থমাস হেয়ার প্রথম পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের প্রস্তাব করেন। কারণ, তার ধারণা ছিল, শুধু বড় দল নয়, ছোট রাজনৈতিক দল ও সংখ্যালঘুরাও যেন প্রতিনিধিত্ব পায়। বিশ শতকের শুরুতে অনেক ইউরোপীয় দেশ, যেমন: বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলো পি আর চালু করেন। এছাড়াও বর্তমানে ৮০টিরও বেশি দেশ, ইউরোপীয় অধিকাংশ দেশসহ, লাতিন আমেরিকার কিছু দেশ, আফ্রিকার কয়েকটি রাষ্ট্র ও দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল ও শ্রীলঙ্কার আংশিক ব্যবস্থা রয়েছে।

 

জাতিসংঘ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার সংসদ—সবই পি আর ভিত্তিক নির্বাচন করে। পি আর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দুই ধরনের রূপ বিদ্যমান। যথা:
(i) Closed List PR: ভোটার কেবল দলের তালিকায় ভোট দেয়, আসন বণ্টন হলে দলের শীর্ষ তালিকার প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়।
(ii) Open List PR: ভোটাররা দলের তালিকার মধ্যে নির্দিষ্ট প্রার্থী বেছে নিতে পারেন।

 

পি আর পদ্ধতি মূলত বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বিভক্ত সমাজগুলোতে প্রতিনিধিত্বমূলক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশের নির্বাচনী রাজনীতি মূলত FPTP (First Past The Post) বা একক সদস্যভিত্তিক আসন পদ্ধতির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ডুভার্জের মতানুসারে, FPTP দুই দলীয় ব্যবস্থা তৈরি করে। অন্যদিকে বাংলাদেশের বড় দলগুলো একধরনের কার্টেল পার্টি (Cartel Party)। পি আর চালু হলে এই কার্টেল ভেঙে যাবে। এছাড়াও পি আর পদ্ধতি বড় দলগুলোকে দুর্বল করার অন্যতম পদ্ধতি। যেমন: নেপালে পি আর চালুর ফলে অনেক ছোট দল সংসদে ঢুকেছে এবং প্রধান দুই দল দুর্বল হয়েছে। পি আর পদ্ধতিতে যদি নির্বাচন হয়, তবে যে নেতিবাচক সমস্যার সৃষ্টি হবে তার মধ্যে অন্যতম হলো:
(i) সরকার গঠনে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে
(ii) অতিরিক্ত দলীয় খণ্ডীকরণ
(iii) ভোটার-প্রার্থীর সরাসরি সম্পর্ক দুর্বল হওয়া
(iv) চরমপন্থী দলের প্রবেশ
(v) নীতিনির্ধারণে ধীরগতি

 

তাত্ত্বিকভাবেও দেখা যায় যে,
(i) ডুভার্জের তত্ত্ব মতে, পি আর মানে বহুদলীয় ব্যবস্থা যা বড় দলের জন্য হুমকি।
(ii) কার্টেল পার্টির তত্ত্ব মতে, বড় দলগুলো সুবিধা হারাবে।
(iii) Rational Choice তত্ত্ব মতে, বড় দলের স্বার্থের সাথে পি আর সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
(iv) রাজনৈতিক সংস্কৃতি: বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পি আর সমর্থনযোগ্য নয়।

বাংলাদেশের জন্য পি আর পদ্ধতির ইতিবাচক প্রভাব হতে পারে:

 

১. সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে: বর্তমানে বড় দলগুলো সংসদে প্রভাব বিস্তার করে, ছোট দল বা স্বাধীন প্রার্থীরা প্রায় বাদ পড়ে যায়।পি আর পদ্ধতিতে প্রতিটি দলের আসন সংখ্যা তাদের প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে নির্ধারিত হবে। উদাহরণ: যদি কোনো দল জাতীয়ভাবে ১০% ভোট পায়, তবে সংসদে প্রায় ১০% আসন পাবে।

 

২. রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বাড়বে: সংখ্যালঘু, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব বাড়বে। উদাহরণ: সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বা নারীভিত্তিক ছোট দলগুলো জাতীয় ভোটে কিছুটা অংশ নিলেও তারা সংসদে আসন পাবে।

 

৩. রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সহনশীলতা তৈরি হবে: একক দলীয় আধিপত্য কমে আসবে, জোট ভিত্তিক সরকার গঠিত হবে। এতে একে অপরকে সহ্য করা ও আলোচনা-সমঝোতার মাধ্যমে নীতি প্রণয়ন বাড়বে। উদাহরণ: ভারতের কেরালা রাজ্যে বা ইউরোপের অনেক দেশে জোট সরকার দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল নীতি এনেছে।

 

৪. ভোটের মূল্য বৃদ্ধি পাবে: প্রত্যেক ভোটই আসনে রূপান্তরিত হতে পারে, ফলে ভোটাররা বঞ্চিত বা অকার্যকর বোধ করবে না। উদাহরণ: কোনো ভোট যদি হেরে যাওয়া প্রার্থীকে না এনে দেয়, তবুও সেই ভোট দলকে সংসদে আসন পেতে সাহায্য করবে।

 

৫. রাজনৈতিক সহিংসতা হ্রাস পাবে: বর্তমানে জয়-পরাজয় নির্ভর প্রথম-আগে-আগে-পদ্ধতিতে (FPTP) এক ভোটের ব্যবধানেই কেউ সব পায় আবার কেউ কিছুই পায় না।কিন্তু পি আর পদ্ধতিতে সবাই কিছু না কিছু পায়, ফলে চরম প্রতিযোগিতা ও সহিংসতার প্রবণতা কমতে পারে।

 

৬. নীতিনির্ধারণে বহুমাত্রিকতা আসবে:
সংসদে একাধিক দল থাকায় নানা মতামত প্রতিফলিত হবে। উদাহরণ: পরিবেশ, নারী অধিকার বা শ্রমিক স্বার্থে ছোট দলগুলো সংসদে আলোচনা জোরদার করতে পারে। অর্থাৎ পি আর পদ্ধতি বাংলাদেশে ভোটের মানে বৃদ্ধি, রাজনৈতিক সহনশীলতা, সংখ্যালঘু ও ছোট দলের অংশগ্রহণ, এবং সহিংসতা কমানোর মতো ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।

 

বাংলাদেশের জন্য পি আর পদ্ধতির নেতিবাচক প্রভাব হতে পারে:

 

১. সরকার গঠনে অস্থিরতা: পি আর পদ্ধতির ফলে সরকার গঠনে অস্থিরতা দেখা দেবে। উদাহরণ: ইতালি বা ইসরায়েলে পি আর পদ্ধতিতে ছোট দলগুলোর প্রভাবের কারণে সরকার প্রায়শই ভেঙে যায়।

 

২. রাজনৈতিক খণ্ডীকরণ: সংসদে অনেক ছোট দল থাকলে নীতিনির্ধারণ জটিল হয়। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে দীর্ঘ সময় লাগবে এবং কার্যকর শাসন দুর্বল হবে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দলগুলোর মধ্যে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকায় এটি আরও সমস্যা তৈরি করতে পারে।

 

৩. নেতিবাচক প্রভাব: বিএনপির মতো বড় দলের জন্য এটি একটি নেতিবাচক সিদ্ধান্ত হবে এবং এর প্রভাবও নেতিবাচক হবে।

 

৪. চরমপন্থী ও আঞ্চলিক দলের উত্থান: পি আর পদ্ধতিতে সামান্য ভোট পেয়েও ছোট দলগুলো সংসদে আসতে পারবে। এতে চরমপন্থী, ধর্মীয় বা আঞ্চলিক বিভাজনমূলক দলগুলোর প্রভাব বাড়বে। এছাড়াও বাংলাদেশে এটি জাতীয় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ঝুঁকি হবে।

 

৫. ভোটার-প্রার্থী সম্পর্ক দুর্বল: পি আর পদ্ধতিতে ভোটার সরাসরি প্রার্থী নয়, দলের প্রতি ভোট দেয়। এতে এমপির জবাবদিহিতা নির্বাচিত এলাকায় ভোটারদের প্রতি কম হবে।

 

৬. প্রশাসনিক ও গণনা জটিলতা: পি আর পদ্ধতিতে আসন