, শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
অভিমানে পরোপারে পাড়ি জমালেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইসমতআরা! পাঁচবিবির ধরঞ্জীতে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেঞ্চে বসা নিয়ে তর্কে এক শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে আহত ৫ বাংলাদেশ প্রেসক্লাব আখাউড়া উপজেলা শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মেহেরপুর-০১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পুন:র্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ৫০ জন কৃষককে কীটনাশক স্প্রে মেশিন ও ২৫ জন কৃষককে ধান ঝাড়ার মেশিন বিতরণ সীমান্তে গুজব ও চোরাচালান রুখতে গণমাধ্যমের সহায়তা চায় বিজিবি মোরেলগঞ্জে জলবায়ু ও সামাজিক সচেতনতা নিয়ে কোডেকের নতুন কমিটি গঠনে আলোচনা সভা র্ণিল আয়োজনে মেহেরপুর সরকারি কলেজে নবীন বরণ ও সাংস্কৃতিক উৎসব আশাশুনির আনুলিয়ায় এমপি প্রার্থী রবিউল বাশারের নির্বাচনী প্রচারনা,শোডাউন ও পথসভা

মাদকের ‘সুরক্ষিত দুর্গে’ অভিযানে গিয়ে হামলায় আহত পুলিশ, আটক ৫

  • প্রকাশের সময় : ০৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৮৫ পড়া হয়েছে

মোঃসুলতান মাহমুদ,গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় হামলায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ও গাঁজাসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলের দিকে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক। এরআগে, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড মসজিদ মোড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন-কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৪), মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আসাদুজ্জামান (৬০), তাঁর স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন (৪৫), ছেলে আসিফ (২৩) ও আল আমিন (৩০)।

এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস, ও জোনায়েদ হোসাইন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অভিযানে ৪৫টি ইয়াবা ও এক কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সুত্র মতে জানা যায়, এ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাড়ির চারপাশে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে তাঁরা কার্যত ‘সুরক্ষিত দুর্গ’ বানিয়ে ফেলেছিলেন। এতে সাধারণ মানুষ ভয়ে কখনো তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেননি। আগে ছাত্রলীগের বড় নেতারা শেল্টার দিলেও ৫ তারিখের পর ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র নেতা ও ছাত্রদলের শেল্টারে চলে মাদকের এই রমরমা বানিজ্য। এছাড়াও বিএনপির ওই নেতার আত্মীয় হওয়ায় ওই বাড়ির মাদকের ব্যবসার প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না কেউ।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আসাদুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের কারণে গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। দিন-রাত যেকোনো সময় এখানে মাদকের ক্রয়-বিক্রয় হতো। ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারত না। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ হয়নি। আর নজরুলের ছেলে সিহাব এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারি। তাকে আটক করতে পারেনা পুলিশ।

তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, আজকেও আটক ব্যক্তিদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে সাংবাদিক ও দলীয় নেতারা ওসির সাথে যোগাযোগ করে। যদিও আটকদের ছাড়তে অটল থাকে ওসি।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদে জানা যায় ওই বাড়িতে মাদক বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীপুর থানা পুলিশের প্রায় ২০–২৫ জনের একটি দল ওই রাতে কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকায় যায়। অভিযান চালিয়ে বসতঘর থেকে ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে আসাদুজ্জামানের ছেলে আসিফকে আটক করা হয়। এ সময় আসাদুজ্জামান এর পরিবারের ৪-৫ জন সদস্য পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাঁরা আটক আসামিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশে আটক ব্যক্তিকে ছাড়াতে দেয়নি।

শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক যায়যায়দিনকে বলেন, এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে একটি মামলা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক আসামিদের শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এলাকায় মাদক ব্যবসার শেকড় উপড়ে ফেলতে। এ জন্য নিয়মিত অভিযান চলছে। কেউ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ অভিযান তারই অংশ। মাদক বন্ধ এমন অভিযান নিয়মিত চলবে।

জনপ্রিয়

অভিমানে পরোপারে পাড়ি জমালেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইসমতআরা!

মাদকের ‘সুরক্ষিত দুর্গে’ অভিযানে গিয়ে হামলায় আহত পুলিশ, আটক ৫

প্রকাশের সময় : ০৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

মোঃসুলতান মাহমুদ,গাজীপুর প্রতিনিধি : গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় হামলায় পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ইয়াবা ও গাঁজাসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলের দিকে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ আব্দুল বারিক। এরআগে, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড মসজিদ মোড় এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন-কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে নজরুল ইসলাম (৫৪), মৃত আবুল কাশেমের ছেলে আসাদুজ্জামান (৬০), তাঁর স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন (৪৫), ছেলে আসিফ (২৩) ও আল আমিন (৩০)।

এ ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস, ও জোনায়েদ হোসাইন। তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। অভিযানে ৪৫টি ইয়াবা ও এক কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সুত্র মতে জানা যায়, এ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বাড়ির চারপাশে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে তাঁরা কার্যত ‘সুরক্ষিত দুর্গ’ বানিয়ে ফেলেছিলেন। এতে সাধারণ মানুষ ভয়ে কখনো তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেননি। আগে ছাত্রলীগের বড় নেতারা শেল্টার দিলেও ৫ তারিখের পর ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র নেতা ও ছাত্রদলের শেল্টারে চলে মাদকের এই রমরমা বানিজ্য। এছাড়াও বিএনপির ওই নেতার আত্মীয় হওয়ায় ওই বাড়ির মাদকের ব্যবসার প্রতিবাদ করতে সাহস পায়না কেউ।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আসাদুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের কারণে গ্রামটি দীর্ঘদিন ধরে মাদকের আখড়ায় পরিণত হয়েছিল। দিন-রাত যেকোনো সময় এখানে মাদকের ক্রয়-বিক্রয় হতো। ভয়ে কেউ কিছু বলতে পারত না। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ হয়নি। আর নজরুলের ছেলে সিহাব এলাকায় চিহ্নিত মাদক কারবারি। তাকে আটক করতে পারেনা পুলিশ।

তারা অভিযোগ করে আরও বলেন, আজকেও আটক ব্যক্তিদের থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে সাংবাদিক ও দলীয় নেতারা ওসির সাথে যোগাযোগ করে। যদিও আটকদের ছাড়তে অটল থাকে ওসি।

পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদে জানা যায় ওই বাড়িতে মাদক বিক্রি হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে শ্রীপুর থানা পুলিশের প্রায় ২০–২৫ জনের একটি দল ওই রাতে কেওয়া পশ্চিমখণ্ড এলাকায় যায়। অভিযান চালিয়ে বসতঘর থেকে ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে আসাদুজ্জামানের ছেলে আসিফকে আটক করা হয়। এ সময় আসাদুজ্জামান এর পরিবারের ৪-৫ জন সদস্য পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তাঁরা আটক আসামিকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশ ও হামলাকারীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এতে পুলিশের দুই সদস্য আহত হন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশে আটক ব্যক্তিকে ছাড়াতে দেয়নি।

শ্রীপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক যায়যায়দিনকে বলেন, এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধার অভিযোগে একটি মামলা এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আটক আসামিদের শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই এলাকায় মাদক ব্যবসার শেকড় উপড়ে ফেলতে। এ জন্য নিয়মিত অভিযান চলছে। কেউ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে না। এ অভিযান তারই অংশ। মাদক বন্ধ এমন অভিযান নিয়মিত চলবে।