
শাহারুল ইসলাম, পলাশবাড়ী গাইবান্ধা প্রাতিনিধি :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় কোনো ধরনের জনজরিপ, মতামত সংগ্রহ বা সচেতনতা কার্যক্রম ছাড়াই নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) কর্তৃপক্ষ দ্রুতগতিতে প্রিপেইড বিদ্যুৎ মিটার স্থাপন শুরু করায় এলাকাজুড়ে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন, আপত্তি জানানো সত্ত্বেও নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করে বাসাবাড়ি, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই মিটার বসানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গ্রাহকদের কল্যাণের নামে প্রিপেইড ব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়া হলেও অতিরিক্ত অর্থ আদায়, ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়া এবং রিচার্জ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে প্রিপেইড মিটার দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। পূর্ব অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছতার ঘাটতির কারণে সাধারণ মানুষ এই উদ্যোগকে সুবিধাবঞ্চিত এবং ভোগান্তিকর হিসেবে দেখছেন।
এর আগে গ্রাহকদের আন্দোলনের মুখে নেসকো কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছিল বাসাবাড়িতে কাউকে বাধ্য করা হবে না, শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় ইচ্ছুক গ্রাহকদের ক্ষেত্রেই প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, বর্তমানে সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে জোরপূর্বক মিটার স্থাপনের চেষ্টা চলছে। কয়েকজন গ্রাহক জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় কর্মীরা ‘উপরের নির্দেশ’ দেখিয়ে বাধ্য করার চেষ্টা করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রিপেইড মিটার ব্যবস্থায় গ্রাহককে আগাম টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনতে হয়, আর রিচার্জের টাকা শেষ হওয়া মাত্রই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটি বিদ্যুৎ আইন ২০০৩-এর ৫৬ ধারা অনুযায়ী প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ আইন অনুসারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে হলে কমপক্ষে ১৫ দিন আগে নোটিশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রিপেইড ব্যবস্থায় এই নোটিশের সুযোগ থাকছে না।
ইতোমধ্যে যারা প্রিপেইড মিটার নিয়েছেন, তারা বাড়তি ডিমান্ড চার্জ, মিটার ভাড়া, রিচার্জ সমস্যা এবং হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়াসহ নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
এ অবস্থায় পলাশবাড়ীর সচেতন মহল ও বিদ্যুৎ গ্রাহকরা অবিলম্বে চলমান প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম বন্ধ এবং ইতোমধ্যে স্থাপন করা মিটারগুলো অপসারণের দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তারা গ্রাহকদের মতামত, স্বচ্ছতা এবং প্রযুক্তির পূর্ণ কার্যকারিতা যাচাই না হওয়া পর্যন্ত প্রিপেইড মিটার বিতরণের যেকোনো উদ্যোগ স্থগিত রাখার আহ্বান জানান।





















